মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। ভোট-পারদের ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী আবহে, বিজেপি বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে (ইভিএম) কারচুপি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সরব হলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট-চুরিতে যিনি ‘মাস্টার্স ডিগ্রি’ করেছেন, তাঁর মুখে এমন কথা শোভা পায় না বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী!
নবান্নে বৃহস্পতিবার এক সরকারি উদ্বোধন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘ওদের (বিজেপি) পরিকল্পনা এখন থেকেই শুরু হয়েছে। ইভিএম ‘হ্যাক’ করার নানা রকম ব্যবস্থা করছে। আমরা কিছু তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি, কিছু খোঁজখবর করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের জোটের (ইন্ডিয়া) বৈঠকে আলোচনা হবে।’’ বিরোধী জোটের পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা আগামী ৩১ অগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও অভিযোগ করেছেন, ‘‘বিজেপির অভিধানেই রয়েছে সন্ত্রাস। তারা সংবিধান মানে না।’’
দুর্গাপুরে বিজেপির সভা থেকে এ দিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এনডিএ না কি ইভিএম হ্যাক করার ব্যবস্থা করছে। ভোট-চুরিতে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি পেয়েছেন! ভিভিপ্যাট ছাড়া আসানসোল-সহ রাজ্যের একশোর বেশি পুরসভায় ভোট করিয়েছেন। তিনি বলছেন ইভিএম হ্যাক হবে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট লাগিয়ে নিজের সততা প্রমাণ করুন!’’ শুভেন্দু বলেছেন, আসানসোলে ২০২২ সালের পুরভোটে বিজেপি ৫-৬টি ওয়ার্ডে জিতেছিল। দু’মাসের মধ্যে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ভিভিপ্যাট-সহ ইভিএমে ভোট হয়, তখন ১০৬টির মধ্যে ৫৪ থেকে ৫৬টি ওয়ার্ডে এগিয়েছিল। আর এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ব্যালট-লুট থেকে শুরু করে গণনায় কারচুপি, কিছুই শাসক দল বাদ দেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এই সূত্রেই বিরোধী দলনেতার পাল্টা দাবি, ‘‘এখন ওরা (তৃণমূল) প্র্যাকটিস করছে ২০২৪ সালের নির্বাচনে কী করে ইভিএম খাওয়া যায়! তার প্রশিক্ষণ চলছে শাসক দলের উপদেষ্টা সংস্থার নেতৃত্বে। ওঁর মুখে শুনতে হবে, ইভিএম হ্যাক হবে! ভারতবর্ষে কোনও পাগল নেই, যারা এই দেশটা নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকে নিয়ে কোনও উন্মাদকে দেবে!’’
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, দলিত থেকে আদিবাসী, সংখ্যালঘু শ্রেণি সকলের উপরে দেশ জুড়ে একতরফা ‘অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। এক প্রশ্নের উত্তরে মমতার বক্তব্য, ‘‘ওরা (বিজেপি) মনে করে, হিংসাই হচ্ছে ক্ষমতা দখলের একমাত্র উপায়। সে জন্য সব কিছুকে গেরুয়া করতে হবে। রং হিসেবে গেরুয়াকে আমরা পছন্দই করি। মনে রাখবেন, গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক। ওটা হিংসার রং নয়।’’