রাম নবমীর দিন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে এ ভাবেই প্রচার করেছিলেন নিবাস সরকার। ফাইল চিত্র
লোকসভা নির্বাচনের আগে নদিয়ার রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের প্রচারে হনুমান সেজে খবরে এসেছিলেন তিনি। শুক্রবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হল সেই নিবাস সরকারের (৫৫)। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কীটনাশক খেয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে তার কারণ অজানা।
সিপিএমের দাবি, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে ভীতির জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন বিজেপির সক্রিয় কর্মী নিবাস। দলের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম টুইট করে তেমনই দাবি করেছেন। যদিও নিবাসের পরিবার তা অস্বীকার করেছে। বর্তমানে রানাঘাট কেন্দ্রের সাংসদ জগন্নাথও দাবি করেন, “একেবারেই ব্যক্তিগত কারণে উনি আত্মঘাতী হয়েছেন। এর সঙ্গে এনআরসি-র কোনও সম্পর্ক নেই। যত সব হাস্যকর কথা।”
হাঁসখালির মিলননগর এলাকায় বাড়ি নিবাসের। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে ঘরে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পান ভাড়াটিয়ারা। প্রথমে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আদত বাড়ি নদিয়ায় হলেও নিবাস বেশির ভাগ সময় এখানে থাকতেন না। তিনি রাজস্থানের উদয়পুরে গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন যাবৎ স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানেই তাঁর বসবাস। মিলননগরের বাড়িটি ভাড়া দেওয়া আছে। তিনি মাঝেমধ্যে এসে কিছু দিন থেকে চলে যেতেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বরও তেমনই এসেছিলেন। নানা কারণে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
নিবাসের দাদা বিদ্যুৎ সরকারের দাবি, “ভাই নেশার কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে।’’ তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র দাবি, “আমরা স্থানীয় সূত্রে খবর পাচ্ছি, উনি এনআরসি-র কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। আমরা চাই, প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখুক।”
খবর পেয়ে সকালেই বিমানে উদয়পুর থেকে চলে এসেছেন তাঁর দুই ছেলে ও স্ত্রী। বড় ছেলে নিউটন বলেন, “বাবার মনে কষ্ট ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে এনআরসি-র সম্পর্ক নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের কাছে ১৯৭১ সালের আগের কাগজপত্র সবই আছে। তাই এ নিয়ে বাবার কোনও চিন্তা ছিল না।”