—ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যে ধাক্কার পর আপাতত বিজেপির ভরসা মন্দিরেই। রথ, কেপিপি-র সমর্থন আদায় থেকে শুরু করে সার্কিট বেঞ্চ, লোকসভা ভোটের আগে জলপাইগুড়ি জেলাবাসীর ‘মন জয়ে’ হাতে একাধিক অস্ত্র সাজিয়েছিল বিজেপি। সোমবার পাঁচ রাজ্যের ফলের পর বিজেপি নেতাদের উপলব্ধি, কোনও কিছুই আর যথেষ্ট নয়। আপাতত অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির দাবিতেই ফিরতে চাইছে বিজেপি। রাজ্য থেকে নির্দেশও এসে গিয়েছে বলে জেলা অফিস সূত্রের খবর। তবে মন্দির নিয়ে প্রচার যতটা প্রকাশ্যে হবে, তার থেকেও বেশি হবে ঘরোয়া সভা-আলোচনা চক্রে এবং বাড়ি বাড়ি কর্মী পাঠিয়ে।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের ফলে উজ্জীবিত কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত, জেলার যে সব এলাকায় কিছু দিন আগেও তাঁদের জনপ্রতিনিধি ছিলেন, সেখানে ফের সভা-সমাবেশ শুরু হবে। রাহুল গাঁধীর সাফল্য জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের কংগ্রেস-নির্ভরতা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেক নেতা। লোকসভা ভোটে দু’দল কাছাকাছি এলে তাঁদের কতটা লাভ হবে, নাকি বিজেপির সুবিধে হবে সে হিসেবে ব্যস্ত জেলা তৃণমূল নেতারা।
পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল জলপাইগুড়িতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে দোলাচলও রয়েছে সব শিবিরে। তবে বিজেপি নেতারা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বিজেপির এক নেতার কথায়, “একটা কথা ভুললে চলবে না, এই রামমন্দির আন্দোলনই আমাদের দলকে সারা ভারতে ছড়িয়ে দিয়েছিল। এ বার রামনবমীতে জলপাইগুড়িতেই বিরাট মিছিল হয়েছে।”
বিজেপির জেলা নেতারা অবশ্য মেরুকরণের এই অঙ্ক এখনই খোলসা করতে রাজি নন। দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামী বলেন, “ধর্মের মেরুকরণ আমরা করি না। তৃণমূল পুলিশ দিয়ে কী সন্ত্রাস করছে, তা সকলেই দেখছেন। সে উত্তর তারা পাবে।”
এ দিনই জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী হুমকির সুরে বলেছেন, “এ বার সময়সীমা বেঁধে দেব। বিজেপির নেতা-কর্মীদের বলব, সেই সময়সীমার মধ্যে তৃণমূলের পতাকার নীচে আসতে।” কংগ্রেসের কাছাকাছি যাওয়ার বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না নেতারা। এ বিষয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে জেলার একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তেমন হলে জেলায় কী প্রভাব পড়তে পারে, তা জানতে চেয়েছেন রাজ্য নেতারা। সৌরভবাবু শুধু বললেন, “পাঁচ রাজ্যে বিজেপি হারার নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অবদান রয়েছে। এটা তো আমাদেরও লড়াই।”
অন্য দিকে, আজ মঙ্গলবার কলকাতায় কংগ্রেসের সভা। সেখান থেকে নেতারা ফেরার পর জেলায় আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হতে চলেছে বলে জেলা কংগ্রেস সূত্রের খবর। জেলা কংগ্রেস নেতা পিনাকী সেনগুপ্তের সঙ্গে রাহুল গাঁধীর ফোন কথা হয়েছিল।
এ দিন রাহুলকে শুভেচ্ছা এসএমএস পাঠিয়েছেন পিনাকী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ বিভিন্ন কারণে অন্য দলে চলে যেতে পারেন, কিন্তু তাঁদের যাঁরা জিতিয়েছিলেন, তাঁদের মনে এখনও কংগ্রেস আছে। আমরা সেই কর্মী-সমর্থকদের নিয়েই সভা এবং আন্দোলন শুরু করব।”