দেবাঞ্জন দেব।
ভুয়ো টিকা কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক তথা সাংসদের সঙ্গে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ছবি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিজেপি। আগামী বিধানসভা অধিবেশনে বিষয়টিকে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরে আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আগামী ২ জুলাই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বক্তৃতা দিয়ে শুরু হচ্ছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। আর এই বাজেট অধিবেশনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণের অস্ত্রে শান দিতে শুরু করেছে বিজেপি। অবৈধ শিবির করে সাধারণ মানুষকে টিকা দিয়ে তাঁদের জীবন বিপন্ন করার অভিযোগ যেমন তাঁরা তুলে ধরবেন তাঁরা, তেমনই অভিযোগ করবেন প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়েও।
ইতিমধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। বিজেপি পরিষদের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেছেন, ‘‘ভয়াবহ কোভিড সংক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে টিকা প্রধান হাতিয়ার। এই অবস্থায় ভুয়ো শিবির করে ভুয়ো টিকা দিয়ে রাজ্যের মানুষের জীবন বিপন্ন করার মতো ঘটনা ঘটছে। আমরা শুধুমাত্র ভুয়ো টিকা নিয়েই প্রতিবাদ জানাব না। আমরা বিষয়টিকে প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে আইএএস আধিকারিক পরিচয় দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রী-সাংসদদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াত। রাজ্য সরকারের কাছে কী আইএএস আধিকারিকদের কোনও তালিকা নেই? কেন তা আগে খতিয়ে দেখা হল না? বিধানসভা আমরা এই বিষয়ে জবাব চাইব।’’
এ বিষয়ে বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেন, ‘‘এটা অবশ্যই চোখ খুলে দেওয়ার মতো ঘটনা। এ ক্ষেত্রে আমাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে তা ঠিকই। কিন্তু বিরোধী দলেরও একটা দায় থেকে যায়। বিজেপি-ও কি নিজের দায়িত্ব পালন করেছে? আমাদের সরকার এই বিষয়ে অবশ্যই কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’
ভুয়ো টিকা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী সাংসদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। কলকাতা কর্পোরেশনের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, লাভলি মৈত্র, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন, প্রাক্তন কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ঘনিষ্ঠতার কথা, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন শুভেন্দু। কী ভাবে এক জন প্রতারকের সঙ্গে শাসকদলের এত জন নেতার ঘনিষ্ঠতা থাকতে পারে, তা নিয়েও বিধানসভায় প্রশ্ন তোলা হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি।