অধিকারীদের গড়ে অমিত শাহের সভা! তবে ২৪ ঘণ্টা আগেও সেই সভার অনুমতি মিলল না।
মঙ্গলবার বেলা একটায় কাঁথি রেল স্টেশন সংলগ্ন ময়দানে বিজেপি সভাপতির জনসভা হওয়ার কথা। সেই কর্মসূচির অনুমোদন নিয়েই সোমবার দিনভর স্থানীয় প্রশাসন ও গেরুয়া শিবিরের টানাপড়েন চলে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সভাস্থল এবং হেলিপ্যাডের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভি সলোমান নেসাকুমার বলেন, ‘‘সভাস্থলের জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। মালিকদের কয়েকজন বিজেপিকে সভার জন্য জমি দিতে রাজি নন। তাই জনসভার অনুমোদন দেওয়া হয়নি।’’ জানা গিয়েছে, ১৯ জন জমির মালিক আপত্তি তুলেছেন।
গত সপ্তাহে অমিত শাহের মালদহের সভাতেও মাঠ পাওয়া নিয়ে টানাপড়েন চলেছিল। পরে অসুস্থতার জন্য ঝাড়গ্রাম ও সিউড়িতে যেতে পারেননি অমিত। ওই দুই জায়গায় সভা করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দুই জায়গাতেই জটিলতা বেধেছিল হেলিপ্যাডের অনুমতি নিয়ে। আর কাঁথিতে সভাস্থল ও হেলিপ্যাড— জোড়া জট তৈরি হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘অমিত শাহের সভা হবেই। আমরা প্রস্তুত।’’ বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, একান্তই সভাস্থলে কপ্টার নামানোর অনুমতি না পেলে ওড়িশা থেকে সভা করে কপ্টারে কলাইকুন্ডায় এসে নামবেন শাহ। সেখান থেকে সড়ক পথে আসবেন কাঁথিতে। তবে দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘কপ্টার কাঁথিতেই নামবে।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন মাইতির অভিযোগ, “প্রশাসন প্রথম থেকেই অসহযোগিতা করছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘এ সব সভায় আমাদের কিছুই যায় আসে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রিগেডের সভার পরে বিজেপি পাগল হয়ে গিয়েছে। ওদের নেতারা আবোল তাবোল বকছেন।’’
অনুমতি নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই শাহের সভার প্রস্তুতি চলেছে জোরকদমে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে মঞ্চ গড়া শুরু হয়েছে। মাইকও পৌঁছে গিয়েছে মাঠে। বিকেলে সভাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। তবে কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুলিশ ‘এনওসি’ দেয়নি। তাই সভায় মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
এ দিন সকালে আবার অমিত শাহের সভার প্রচারে বেরনো একটি গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি চলে মারধর। আহত হন গাড়ির চালক-সহ দুই বিজেপি কর্মী। ভগবানপুর-২ ব্লকের পাঁচহরি বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বিজেপির ভগবানপুর-১ মণ্ডল সভাপতি দেবব্রত করের দাবি, ‘‘শাহের সভার আগেই তৃণমূল নেতারা বিজেপির প্রচারকে ভয় পাচ্ছে। তাই দুষ্কৃতীদের মাঠে নামিয়ে আমাদের আটকানোর চেষ্টা করছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানব পড়্য়া বলেন, ‘‘সবটাই বিজেপির সাজানো।’’