ছবি: সংগৃহীত।
এক দিকে রাজ্য জুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান, অন্য দিকে বাংলার ‘হিংসা’র চিত্র জাতীয় স্তরে পৌঁছে দেওয়া— জোড়া কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামল রাজ্য বিজেপি।
রাজ্য দলের সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার থেকে জেলায় জেলায় প্রায় ২০ হাজার বিস্তারক (প্রচারের কর্মী) সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামছে। কর্মসূচি চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত।
পাশাপাশি সোমবারই বিজেপি কর্মীরা ২৩ টি ‘শহিদ’ পরিবারকে দিল্লি নিয়ে গেলেন। রাজ্য বিজেপির দাবি, প্রাক-নির্বাচন পর্ব থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসায় নিহত কর্মীদের পরিবার গুলির কথা তাঁরা জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিতে চান। সে জন্যই তাঁদের দিল্লি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জুলাই মাসের গোড়া থেকেই গোটা দেশ জুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, বাংলাকে এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। সেই সূত্রেই দলের ৩৮টি সাংগঠনিক জেলায় আজ থেকে ছড়িয়ে পড়ছেন বিস্তারকেরা। ব্লক স্তরে পৌঁছে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পাশাপাশি তাঁরা জনসংযোগও করবেন। দুর্গাপুজোর কথা মাথায় রেখে ক্লাবগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ানো হবে বলে সূত্রের খবর। কারণ, ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বারের দুর্গাপুজোকে জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
বিজেপি সূত্রের খবর, ৩১ জুলাই সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি শেষ করে রাজ্য নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেবেন বিস্তারকরা। সে সময় সদস্য সংগ্রহের হিসেব নিতে রাজ্যে আসার কথা কেন্দ্রীয় নেতা শিবরাজ সিংহ চহ্বানের।
দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিস্তারকেরা ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের হাত ধরেই ব্লকে ব্লকে বিজেপি জনসংযোগ মজবুত করবে। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’
উল্লেখ্য, রবিবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলকর্মীদের গ্রামে গ্রামে, ব্লকে ব্লকে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন, গ্রামে গিয়ে খাটিয়ায় বসে জন সংযোগ করতে হবে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তৃণমূল ব্লকে ব্লকে পৌঁছনোর আগেই আমরা অভিযান শেষ করব।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলার সাংসদদের কিছু দিন আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যের ‘রাজনৈতিক হিংসা’র ছবি তুলে ধরতে হবে গোটা দেশে। সে কথা মাথায় রেখেই এ দিন রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে নিয়ে আসা হয় ‘রাজনৈতিক হিংসা’য় নিহত ২৩ জন ‘শহিদে’র পরিবারকে। যার মধ্যে দাড়িভিটে নিহত তাপস বর্মন, রাজেশ সরকার, সন্দেশখালিতে নিহত প্রদীপ মণ্ডলের পরিবারও রয়েছে। এ দিনই তাঁদের নিয়ে দিল্লি রওনা হন রাজ্য দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক সপ্তর্ষি চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, একটি সংগঠনের আয়োজনে বুধবার দিল্লিতে একটি গণ আদালতের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যেখানে প্রাক্তন বিচারপতিরা ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা সেখানে নিজেদের কথা বলার সুযোগ পাবেন। বিচারও চাইবেন। এ ছাড়া, সংসদের অ্যানেক্সিতে বুধ এবং বৃহস্পতিবার আলোচনাসভার আয়োজন করেছে বিজেপি। সেখানে রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা বঙ্গে লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনা তুলে ধরবেন দলের অন্য রাজ্যের সাংসদদের সামনে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।