বিধানসভায় বিতর্কিত বিলের বিরোধিতাই করলেন না দিলীপ!

বিলের বিরোধিতা না করে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ! দলীয় সূত্রের খবর, এর ফলে দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০১
Share:

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

কাউন্সিলর নন, এমন কাউকে মেয়র করার সংস্থান রাখতে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলের বিরোধিতা না করে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ! দলীয় সূত্রের খবর, এর ফলে দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ‘দ্য কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ পাশ হয়। যার নির্যাস— কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর না হলেও মেয়র হওয়া যাবে। তবে ছ’মাসের মধ্যে তাঁকে কোনও ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়ে আসতে হবে। রাজ্যের অন্য পুরসভা বা পুরনিগমেও এই সংস্থান রাখতে বিল আসবে বলে ওই দিনই বিধানসভায় ইঙ্গিত দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলীপবাবু সে দিন বিধানসভায় ওই বিলের বিরোধিতা করেননি। তবে তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘‘কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের ১২২ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কি মেয়র হওয়ার মতো যোগ্য কেউ নেই? বাইরে থেকে ভাড়া করে আনতে হচ্ছে কেন?’’ এ ভাবে কাউন্সিলর নন, এমন কাউকে মেয়র করে সরকার পক্ষ নির্বাচকদের উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করছে বলে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন। বিলের অন্য একটি অংশ অবশ্য দিলীপবাবু সমর্থন করেছিলেন। বিজেপির অন্দরে এখন চর্চা হচ্ছে— প্রশ্ন তুললেও ওই বিলের বিরোধিতা বিধানসভায় নথিভুক্ত না করিয়ে দিলীপবাবু ঠিক করেননি। তাঁর উচিত ছিল, ভোটাভুটি চেয়ে বিজেপির বিরোধিতা সভায় নথিভুক্ত করানো। কারণ, বিজেপি নেতাদের মতে, ওই বিল ‘বেআইনি’ এবং ‘অসাংবিধানিক’।

বিজেপি সূত্রের খবর, দলের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এখন মনে করছেন, রাজ্য বিধানসভায় বিল এনে কলকাতা পুরসভার আইনে ওই বদল করা যায় না। তা করতে হলে সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। তা ছাড়া, কলকাতা পুরসভার বর্তমান আইনের ৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, পুরসভার সদস্য না থাকলে কেউ মেয়রও থাকতে পারবেন না। সংশোধনী বিলে সেই ধারাটি বাদ দেওয়া হয়নি। বামেরা গত বৃহস্পতিবার এই অভিযোগগুলিই তুলে ওই বিলের বিরোধিতা করেছিল। তবে পূর্বঘোষিত বয়কটের কারণে বাম বিধায়কেরা ওই দিন সভায় যাননি।

Advertisement

ওই বিলের আইনে পরিণত হওয়া ঠেকাতে আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছে বামেরা। বিজেপিও মনে করছে এ বিষয়ে আদালতে যাওয়াই ঠিক পথ। কিন্তু দিলীপবাবু যে হেতু বিধানসভা অধিবেশনে ওই বিলের বিরোধিতা করেননি, তাই বিজেপির পক্ষে আর আদালতে যাওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে দলের একাংশের অভিমত, আজ, সোমবার রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে ওই বিলের ত্রুটিও ব্যাখ্যা করে আসা হোক।

এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমরা ওই বিল সমর্থন বা বিরোধিতা কিছুই করিনি। সভায় বসেছিলাম, বক্তৃতা করেছি। রাজ্যপালকে বিল নিয়ে যা বলার, বলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement