শুক্রবার বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। নিজস্ব চিত্র।
বগটুই-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি চাইল বিজেপি পরিষদীয় দল। শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগগা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভায় বিবৃতি দাবি করেন। কিন্তু স্পিকার জানান, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ওই গ্রামে গিয়ে সরকারি ভাবে পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু স্পিকারের কথায় কর্ণপাত না করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। এক সময় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। তা উপেক্ষা করেই বিধানসভার কার্যক্রম চালিয়ে যায় সরকার পক্ষ। প্রায় ২০ মিনিট বিরতির পর বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।
পরে অধিবেশন কক্ষের বাইরে একটানা বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ বলেন, "বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন রাজ্যে কোনও বড় ঘটনা ঘটলে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভায় বিবৃতি দেওয়াই রেওয়াজ। এমনকি সেই সময় কোনও বড় সরকারি ঘোষণা করতে হলেও বিধানসভাতেই করতে হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কিছুই মানেন না।" তিনি আরও বলেন, "রামপুরহাটে যা ঘটেছে, তা মধ্যযুগীয় ঘটনাকেও হার মানায়। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে আমরা অনড়। তিনি যত ক্ষণ না বিবৃতি দিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করছেন, তত ক্ষণ আমরা এ ভাবেই অধিবেশনের ভিতরে ও বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়ে যাব।" তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যা যা পদক্ষেপ করা প্রয়োজন তা তিনি করেছেন। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করিয়েছেন। এর পর বিজেপি পরিষদীয় দলের এমন দাবি অবান্তর।
উল্লেখ্য, সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁদের অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, শুধু অভিযুক্ত নন, এই ঘটনায় কাউকে সন্দেহ হলে তাঁকেও গ্রেফতার করতে এবং নিজেদের হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। তার পরেও মুখ্যমন্ত্রী মুখ থেকেই বগটুইয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে বদ্ধপরিকর বিজেপি-র পরিষদীয় দল।