ফাইল চিত্র।
নবান্ন অভিযানের পর এ বার উত্তরকন্যা অভিযান বিজেপির। মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার দিনেই এই অভিযানে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির যুব মোর্চা কর্মসূচির ডাক দিলেও, এখানে থাকবেন রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতারা।
সোমবার মেদিনীপুরে জনসভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর জনসভার পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে উত্তরকন্যা অভিযানকে হাতিয়ার করেছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আমপান ও করোনাতে দুর্নীতি, বেকারত্বের হার, চা শ্রমিকদের দুরবস্থা, উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চনা-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক বিজেপির যুব মোর্চার।
উত্তরকন্যা অভিযানে দু'দিক থেকে দুটি মিছিল করবেন বিজেপি কর্মীরা। একটি মিছিল যাবে জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ি থেকে এবং অন্যটি যাবে শিলিগুড়ির জলপাই মোড় থেকে। জলপাইগুড়ির মিছিলটিতে নেতৃত্ব দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ ছাড়া থাকবেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু সহ বিজেপি নেতাকর্মীরা। শিলিগুড়ির মিছিলটিতে নেতৃত্ব দেবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ ছাড়া ওই মিছিলে থাকবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন।
আরও পড়ুন: ‘ভারত বন্ধ’এর দিন ছেড়ে বুধবার রাজ্যে আসছেন বিজেপি সভাপতি নড্ডা
বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই অভিযানকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এক ঢিলে দুটো পাখি মারতে চাইছে গেরুয়া শিবির। প্রথমত, এই অভিযানের ফলে নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। সংগঠনও সেখানে মজবুত রয়েছে দলের। এই অভিযানের মাধ্যমে আর একবার সেখানে নিজেদের শক্তিপরীক্ষা করতে চাইছে দল। দ্বিতীয়ত, পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং তিন বছর পর সক্রিয় হয়েছেন। প্রকাশ্য জনসভা থেকে তৃণমূলকে সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে তৃণমূল ও গুরুংপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ আরও তীব্র করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্য চালাচ্ছেন ভাইপো’, নাম না করে ফের অভিষেককে তোপ কৈলাসের
বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলা থেকে বিজেপি কর্মীরা এই অভিযানে অংশগ্রহণ করবেন। এ প্রসঙ্গে সায়ন্তন বসু বলেন, "উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলা থেকে বিজেপি কর্মীরা এই অভিযানে অংশগ্রহণ করবেন।" উত্তরকন্যা অভিযানে ১ লক্ষেরও বেশি বিজেপি কর্মী অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি দাবি করেছেন। অন্যদিকে, বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান নিয়ে আগাম সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসনও। প্রশাসনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সোমবার উত্তরকন্যা যাওয়ার একাধিক রাস্তা বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীদের পিছু হঠাতে জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস আগাম প্রস্তুত রেখেছে পুলিশ কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর নবান্ন অভিযান করেছিল বিজেপির যুব মোর্চা। ওই মিছিলে পুলিশের বিরুদ্ধে জলকামানে রঙিন পর্দাথ মেশানোর অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে। উত্তরকন্যা অভিযানে এই ধরণের কোনও বন্দোবস্ত নেই বলে জানাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তবে বিক্ষোভকারীদের হঠাতে জলকামান ব্যবহারের কথা জানান তাঁরা।
(এই খবর প্রথম প্রকাশের সময় তেজস্বী যাদবের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল, তেজস্বী সূর্যের বদলে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।)