সবংয়ের সভায় বিজেপি নেতৃত্ব। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
মাসখানেক আগেই বিজেপিতে এসেছেন তৃণমূলের একসময়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তৃণমূলের সেই ‘মেরুদণ্ড’ এখন বিজেপিতে আসায় সবংয়ের উপ-নির্বাচনে জয়ের আশা দেখছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
২১ ডিসেম্বর সবংয়ে উপ-নির্বাচন। তার আগে শনিবার সবং হাইস্কুল মাঠে কর্মিসভার করে বিজেপি। কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছাড়াও হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা সুরেশ পূজারী, মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সবংয়ের প্রার্থী অন্তরা ভট্টাচার্য প্রমুখ। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া সাংসদ মানস ভুঁইয়ার স্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী গীতারানি ভুঁইয়াকে হারানোর আহ্বান জানান বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সূত্রেই কৈলাস বলেন, “মেরুদণ্ড ছাড়া কি মানুষ দাঁড়াতে পারে? এখন তৃণমূলের মেরুদণ্ড কোথায়? বিজেপিতে (মুকুল রায়ের দিকে ইঙ্গিত করে)। তাহলে এখন কি তৃণমূল এই রাজ্যে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে?” মুকুল আবার গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল কর্মী খুনে মানস ভুঁইয়ার নাম জড়ানোর কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের অনেক কর্মী ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে হয়তো প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। তাঁদের বলি, তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সেজেই বুথে যান।
কিন্তু মনে মনে শপথ নিন, তৃণমূল কর্মীর হত্যাকারীর স্ত্রীকে একটিও ভোট দেব না।”
এ দিন সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। বেলা বাড়তেই শুরু হয় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বিজেপির সভা এগোয়। আজ, রবিবার সবংয়ে সভা করবে তৃণমূল। থাকবেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে বিজেপি-র বৃষ্টি ভেজা সভায় ভিড় ছিল যথেষ্ট। মঞ্চে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যায়, “পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তন সবং থেকে শুরু হোক। আপনারা দুর্যোগ উপেক্ষা করে এসেছেন। এই ভালবাসা দলকে এগিয়ে দেবে।” কৈলাসও বলেন, “এই বৃষ্টিকে বলে ‘চুপচাপ বারিষ’। মনে রাখবেন এটা চুপচাপ পদ্মফুলে ছাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।” এর পরে কীভাবে কেন্দ্রের দু’টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া, সাইকেল বিলিকে রাজ্য সরকারের প্রকল্প বলে চালানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন তিনি।
বিজেপি নেতৃত্ব এ দিন আগাগোড়া বিঁধেছেন ‘দলবদলু’ মানস ভুঁইয়াকেও। মুকুল বলেন, “সবংয়ে যে তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছিলেন, তাতে মানস ভুঁইয়ার হাত রক্তাক্ত হয়ে রয়েছে। উনি বলেছিলেন মৃত্যুর সময়ও কংগ্রেসের পতাকা জড়িয়ে থাকবেন। কিন্তু দলত্যাগ করেছেন। আমিও দলত্যাগ করেছি। তবে সাংসদপদ ছেড়ে। আর মানসবাবু সাংসদ না হওয়া পর্যন্ত অনৈতিকভাবে বিধায়ক পদ আঁকড়ে থেকেছেন।” বিজেপি প্রার্থী অন্তরাও চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন মানসকে। তাঁর কথায়, “মানসবাবু প্রচারে বলছেন আমার বিরুদ্ধে ৪টি খুনের মামলা ঝুলছে। মনোনয়নে লিখেছি, একটিও আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলা নেই। মানসবাবু তাঁর দাবি প্রমাণ করতে পারলে প্রার্থিপদ ছেড়ে দেবো।”