অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার টানা তিন দিনে পাঁচটি সভা হবেই। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ শারীরিক অসুস্থতার জন্য আসতে না পারলে অন্য কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী এবং অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ওই সভাগুলি করবেন। আর রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছিলেন, শুক্রবারের মধ্যে সুস্থ হয়ে রবিবারেই সভা করতে রাজ্যে আসবেন শাহ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’রকম কথাই বদলে ফেলল বিজেপি! দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবার জানালেন, শারীরিক অসুস্থতার জন্য শাহের সভাগুলি দু’দিন করে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রবিবারের বদলে মঙ্গলবার মালদহে সভা করবেন শাহ। বুধবার ঝাড়গ্রাম ও সিউড়িতে এবং বৃহস্পতিবার জয়নগর ও কৃষ্ণনগরে তাঁর সভা হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ডিসেম্বরে বিজেপির রথযাত্রা উদ্বোধনে তিন দিন রাজ্যে আসার কথা ছিল শাহের। রথযাত্রাই না হওয়ায় তাঁর সেই সফর বাতিল হয়। তার পর বিজেপি জানিয়েছিল, ১৬ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে এবং ২৪ জানুয়ারি কলকাতায় শাহের সভা হবে। পরে তা-ও বাতিল হয়। গত বুধবার বিজেপি জানায়, রবিবার থেকে মঙ্গলবার তিন দিনে পাঁচটি সভা করবেন সর্বভারতীয় সভাপতি। সে দিন রাতে শাহই টুইট করে জানান, তাঁর সোয়াইন ফ্লু হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ফের তাঁর কর্মসূচিতে বদল হল। এই অভিজ্ঞতার নিরিখে এখন রাজ্য বিজেপির অন্দরে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এই পরিবর্তন অপরিবর্তিতই থাকবে না তো?
দিলীপবাবু এ দিন জানান, শাহের সভার জন্য প্রশাসন তাঁদের জায়গা দিচ্ছে না। তাই মালদহে এক সিপিএম কর্মীর জমিতে, সিউড়িতে দলের কালোসোনা মণ্ডলের জমিতে এবং জয়নগরে কংগ্রেস শাসিত স্থানীয় পুরসভার মাঠে শাহের সভা করা হবে। মালদহে অবশ্য শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হেলিকপ্টার নামার জন্য বিজেপিকে বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতিও দেয়নি জেলা প্রশাসন। বিজেপির উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন্দ্রনাথ বসু বলেন, “প্রশাসনের কর্তারা আমাদের লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বিমানবন্দর ব্যবহার করা যাবে না।” প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, বিমানবন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। তাই অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে এখানেও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রথীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, “প্রতি বুধবার সরকারি হেলিকপ্টার নামে বিমানবন্দরে। অথচ বিজেপিকে অনুমতি দেওয়া হয়নি হেলিকপ্টার নামানোর।” তবে বিকল্প হেলিপ্যাড তৈরি করে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র।
এ দিকে, শাহ, রামলাল, অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদ-সহ দলের এক ঝাঁক নেতা অসুস্থ হয়ে পড়ায় দল ও নেতাদের স্বাস্থ্য কামনায় এ দিনই আহিরিটোলায় গঙ্গার ঘাটে যজ্ঞ করেন উত্তর কলকাতার দলীয় নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। তবে সেখানে ওই নেতা এবং যজ্ঞের পুরোহিত ছাড়া আর কারও দেখা মেলেনি।