শনিবার মালদহে জেপি নড্ডা। নিজস্ব চিত্র।
জয় শ্রীরাম শুনলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন রেগে যাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। নবদ্বীপ থেকে দলের ‘পরিবর্তন যাত্রা’ সূচনার আগে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেই দিন শুরু করলেন নড্ডা। শনিবার সকালে তিনি প্রথমে যান মাহলদহের সাহাপুরে। সেখানে ছিল বিজেপি-র ‘সহভোজ’ কর্মসূচি। কৃষকদের সঙ্গে এক পঙক্তিতে বসে খিচুড়ি, তরকারি খান। সেখান থেকে তাঁর আক্রমণ, ‘‘যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই ‘জয় শ্রীরাম’ শুনতে পাচ্ছি। হেলিকপ্টারে আসার সময় যে দিকে হাত নাড়ছি, শুধুই ‘জয় শ্রীরাম’ শোনা গিয়েছে। মমতাজি ‘জয় শ্রীরাম’ শুনলে এত রেগে যান কেন?’’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে মমতার বক্তব্যে বাধা তৈরি করার অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। তার পরে বক্তৃতা দেননি মমতা। এ বার সেই ঘটনাকে যে বিজেপি রাজ্যে নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে প্রচারের হাতিয়ার করতে চলেছে, তা শনিবার যেন স্পষ্ট করে দিলেন নড্ডা। তবে শুধু মমতা নয়, তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেন তিনি। বলেন, ‘‘চারিদিকে শুধু পিসি-ভাইপোর হাতজোড় করা কাটআউট। বাংলার মানুষও এ বার তাঁদের হাত জোড় করে বিদায় দেওয়ার অপেক্ষা করছেন।’’ মালদহে নড্ডার কর্মসূচিতে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।
নির্বাচনের আগে বাংলার কৃষকমন জয় করতে ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’ নামে রাজ্যে কর্মসূচি চালাচ্ছে বিজেপি। গত ডিসেম্বরে বঙ্গসফরে এসে নড্ডাই ৫টি বাড়িতে ‘মুষ্টিভিক্ষা’ করে সেই কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন। এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই ভিক্ষায় সংগৃহীত চাল ও সবজি নিয়ে ‘সহভোজ’ হবে বলে ঠিক করে পদ্ম শিবির। প্রথম বড় আকারের ‘সহভোজ’ কর্মসূচি মালদহে হল শনিবার। সেখানে মমতা সরকারকে ‘টা টা’ করার ডাক দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের জন্য কী কী করেছে তার ফিরিস্তিও দেন নড্ডা। বলেন, ‘‘মোদীজি ৬ হাজার টাকা প্রকল্পের মারফত দিয়েছিলেন। কৃষক সম্মাননিধি কেন্দ্র দিলেও, জেদের বশে তা নেননি মমতাদি। বাংলার ৭০ লাখ কৃষক বঞ্চিত হয়েছেন। ভোট এসে গিয়েছে, এখন আর আফশোস করে কোনও লাভ নেই।’’ সাহাপুরে ‘সহভোজ’ শেষ করে ইংরেজবাজারের ফোয়ারা মোড় থেকে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি পর্যন্ত একটি রোড শো করেন নড্ডা।