দায়িত্ব বাড়ল শিবপ্রকাশের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রকাশ্য রাজনীতিতে থাকেন না বাংলার দায়িত্ব প্রাপ্ত বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা শিবপ্রকাশ। কিন্তু নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে বিজেপির লড়াইয়ে অন্যতম সেনাপতি তিনি। আড়াল থেকে বাংলার সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিবপ্রকাশের কাজের ক্ষেত্র আরও বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। বৃহস্পতিবারই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ চিঠি দিয়ে শিবপ্রকাশের নতুন দায়িত্ব ঘোষণা করেছেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশকে এ বার পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার দায়িত্ব দেওয়া হল।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহর ভরসার নেতা শিবপ্রকাশ ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠন বিস্তারে অত্যন্ত ভাল কাজ করেন বলেই মনে করে বিজেপি। এ বার যে সব রাজ্যের দায়িত্ব শিবপ্রকাশকে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ছাড়া কোথাও ক্ষমতায় নেই বিজেপি। বাকি রাজ্যগুলিতে সংগঠন মজবুত করে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যেই বিজেপির শিবপ্রকাশে ভরসা বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শিবপ্রকাশ পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব নিয়ে আসার পরেই গত লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন জেতে বিজেপি। সেই জয়ের ক্ষেত্রেও শিবপ্রকাশের বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন বিজেপির রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: বিজেপি-তে যোগ, শিরে সংক্রান্তি নিয়ে এখন অধীর অপেক্ষা মকর সংক্রান্তির
২০১৪ সালে দার্জিলিং ও আসানসোল লোকসভা আসনে জিতেছিল বিজেপি। রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, "২ থেকে সাংসদ সংখ্যা ১৮-তে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ৪৮ মাসের পরিকল্পনা বানিয়েছিলেন শিবপ্রকাশ।" ওই নেতা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে মোদী সরকার বিপুল ক্ষমতা নিয়ে আসার পরেই দিল্লিতে একটি সাংগঠনিক বৈঠক ডেকেছিলেন অমিত শাহ। সেখানেই অমিত বলেছিলেন, এখন থেকেই পূর্বের দিকে নজর দিতে হবে। বিজেপির 'লুক ইস্ট পলিসি' তৈরি হয় তখনই। সেই পরিকল্পনাতেই ত্রিপুরায় যান মহারাষ্ট্রের নেতা সুনীল দেওধর, আগরা থেকে বাংলায় আসেন শিবপ্রকাশ। রাজ্য বিজেপির ওই নেতা জানিয়েছেন, শিবপ্রকাশ বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে 'নব দীপ' পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন। অন্য দল থেকে বিজেপিতে নেতা নিয়ে আসা কিংবা বুথ স্তরে বিস্তারক নিয়োগ সবই না কি ছিল শিবপ্রকাশের ওই পরিকল্পনার অঙ্গ ছিল। তিনিই বাংলার বিজেপি নেতাদের বুঝিয়েছিলেন, গ্রামে বিশেষ করে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় পৌঁছে দিতে হবে দলের পতাকা।
আরও পড়ুন: ‘কুপুত্র’ শুভেন্দুর সঙ্গে বিধানসভায় লড়তে তৈরি হচ্ছেন ‘নন্দীগ্রামের মা’
বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফলের পর শিবপ্রকাশের উপরে ভরসা বাড়ে মোদী-শাহদের। এর পরে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনেও অন্তরালে থেকে সংগঠন পরিচালনার ভার পড়ে তাঁর উপরে। এ বার সেই লড়াইয়ের মধ্যেই শিবপ্রকাশের মুকুটে নতুন পালক।