বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা মামলায় বিজেপির আরও এক বিধায়ককে নোটিস ধরাল কলকাতা পুলিশ। কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে তলব করা হয়েছে লালবাজারে। পুলিশের চিঠিকে ‘প্রেমপত্র’ বলে কটাক্ষ করেছেন মিহির।
বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ করে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিল তৃণমূল। ১১ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ যায় লালবাজারে। শুক্রবার জানা গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে সাত জনকে লালবাজারে ডাকা হয়েছে। তাঁরা হলেন শঙ্কর ঘোষ, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, মনোজ টিগ্গা, দীপক বর্মন, নিলাদ্রী শেখর দানা, বঙ্কিম ঘোষ এবং শিখা চট্টোপাধ্যায়। পরে জানা গেল, মিহিরকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৫ ডিসেম্বর বেলা ১টায় লালবাজারের দুর্নীতি দমন শাখায় হাজিরা দিতে হবে মিহিরকে। তদন্তকারী আধিকারিক চিঠিতে জানিয়েছেন, বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার যে অভিযোগ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মিহিরকে। এর মধ্যে বিধায়ককে বেশ কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। তিনি এই ধরনের আর কোনও কাজ করবেন না। বর্তমান মামলার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। এ বিষয়ে কাউকে ভয় দেখানো বা কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করবেন না। প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁকে আদালতে হাজির হতে হবে। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।
পুলিশের এই চিঠি প্রসঙ্গে মিহির আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘পুলিশের প্রেমপত্র পেয়েছি।’’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার থেকে বিধানসভায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল। বুধবার সেখানে হাজির ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে বিধানসভার অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা। ওই একই সময়ে তৃণমূলের বিক্ষোভস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে বিধানসভার সিঁড়িতে বসে পাল্টা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। তুলছিলেন সরকার-বিরোধী স্লোগান। তৃণমূল বিধায়কেরা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়েও বিজেপি শিবির থেকে স্লোগান শোনা যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ তোলেন। পরে বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, উপমুখ্যসচেতক তাপস রায় ১২ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে বিধানসভার স্পিকারের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই ১২ জনের তালিকায় বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামও ছিল। পরে তা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও বিধানসভায় অনুরূপ ঘটনা ঘটে। সে দিনও একটি চিঠি যায় স্পিকারের কাছে। স্পিকার দু’দিনের দু’টি চিঠি লালবাজারে পাঠিয়ে দেন। তার পরেই হস্তক্ষেপ করে পুলিশ।