শনিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সৌমিত্র। রবিবার গৌরীশঙ্কর। ফাইল চিত্র
রাজ্য বিজেপির সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। একই সঙ্গে বহরমপুরের বিধায়ক কাঞ্চন মৈত্রও দলের রাজ্য কমিটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। দু’জনেরই ক্ষোভ রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। জেলায় অযোগ্যদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং বারবার বলা সত্ত্বেও রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টা কানে তুলছেন না বলে সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ তুলেছেন গেরুয়া শিবিরের এই দুই বিধায়ক। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের অভিজ্ঞতার অভাবেই আসানসোল ও বালিগঞ্জে ভরাডুবি হয়েছে। একের পর এক উপনির্বাচনে দলের পরাজয়ের জন্যও রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন গৌরীশঙ্কর ও কাঞ্চন। তাঁদের সঙ্গে দলের রাজ্য কর্মসমিতি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের দুই নেতা বাণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর চৌধুরী।
বালিগঞ্জে জামানত জব্দ এবং দু’বার জেতা আসানসোলে বিপুল ভোটে পরাজয়। শনিবারের জোড়া বিপর্যয়ের পরেও শান্তি নেই রাজ্য বিজেপিতে। শনিবার সন্ধ্যাতেই রাজ্য নেতৃত্বকে ‘অপরিণত’ বলে আক্রমণ করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ তথা রাজ্যের অন্যতম সহ-সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। সেই অস্বস্তির মধ্যেই রবিবার রাজ্য কমিটি ছেড়ে দিলেন মুর্শিদাবাদের দুই বিধায়ক। গৌরীশঙ্করের অভিযোগ, ‘‘জেলা সভাপতি ইচ্ছা মতো সংগঠন চালাচ্ছেন। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন লোকদের দায়িত্ব দিচ্ছেন। এ নিয়ে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। তাই আমার রাজ্য কমিটিতে থাকার কোনও অর্থই হয় না।’’ এই প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘দলের ভিতরে অনেক মতান্তর হয়। গোটা বিষয়টা নিয়ে আমি সকলের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি, খুব তাড়াতাড়ি সমাধানও হয়ে যাবে।’’
অতীতে দু’বার মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি থাকা গৌরীশঙ্কর বিজেপির ‘আদি নেতা’। জেলায় গেরুয়া শিবিরের সংগঠন বিস্তারেও তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মানেন রাজ্য নেতারাও। গত বিধানসভা নির্বাচনে জেলা থেকে দু’টি আসনও পায় বিজেপি। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই দলের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতের অমিল হচ্ছিল। বিধায়কদের বৈঠকেও তিনি জেলা কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তিনি যে এমন ভাবে পদত্যাগ করবেন তা ভাবেননি রাজ্য নেতৃত্ব। শুধু পদ ছাড়াই নয়, রবিবার গৌরীশঙ্কর এমন হুমকিও দিয়েছেন যে, জেলায় বিজেপিকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনে তিনি আলাদা সংগঠন গড়বেন।
গৌরীশঙ্কর-সহ বাকিদের পদ ছাড়া নিয়ে সরব হয়েছেন দলের আর এক নেতা অনুপম হাজরা। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘কেন এতগুলো ইস্তফা একসঙ্গে, সেটা রাজ্য বিজেপির খুব গুরুত্ব সহকারে বিচার-বিশ্লেষণ করা উচিত।’