ছবি: সংগৃহীত।
‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মাশানে’। বাংলা ছবিতে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর এই সংলাপ বেশ কয়েক বছর ঘুরেছে সিনেমাপ্রেমীদের মুখে। এ বারে এমনই হুঁশিয়ারি শোনা গেল বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি নির্মল দামের মুখে। যা নিয়ে পুলিশের মধ্যে তীব্র বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এবং বেগতিক দেখে নিজের কথার নতুন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নির্মল।
গোলমালের সূত্রপাত সোমবার। এ দিন দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কয়েকশো নেতা-কর্মী। তাঁদের বক্তব্য ছিল, রাজ্য জুড়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপরে তৃণমূল ও পুলিশের অত্যাচার চলছে, এবং উত্তর দিনাজপুর জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। ওই বিক্ষোভ চলাকালীন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন নির্মল। অভিযোগ, তখন তিনি বলেন, ‘‘আজকের আন্দোলনের পর জেলায় দলের কোনও নেতা, কর্মী, সমর্থক বা জনপ্রতিনিধির উপর হামলা হলে বা জেলায় দলের কোনও কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হলে, বিজেপি কী জিনিস তা পুলিশ বুঝবে। মিঠুনের ডায়ালগটা মনে আছে তো? মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে। এটা পুলিশকে বুঝতে হবে।’’
বিজেপি নেতার এই কুকথায় পুলিশ-প্রশাসন থেকে তৃণমূল, সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে অবশ্য প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাননি। তবে পুলিশমহলের কেউ কেউ জানিয়েছেন, এই ভাবে উস্কানি দেওয়া অনুচিত। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এ দিনের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সমস্ত বিজেপি নেতার বক্তব্যের ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার কিছু বলতে চাননি।
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অমল আচার্য এই কথার তীব্র নিন্দা করে বলেন, ‘‘নির্মলবাবু গুন্ডাদের ভাষায় কথা বলে দলীয় নেতা ও কর্মীদের প্ররোচিত করেছেন। তাই এ জেলায় কারা তৃণমূলের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে, তা নির্মলবাবুর মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে বলার ঘটনাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
বেগতিক দেখে নির্মল অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি দলের আন্দোলনে যোগ দিয়ে ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’ বলেছি। তবে ওই কথা আমি পুলিশ বা কোনও রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে বলিনি।’’