Suvendu Adhikari

‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ চালু করতে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে, রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ শুভেন্দুর

শুক্রবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ১৫২ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ আনেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি চালু করতেই এই দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ১৮:১৪
Share:

(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস, শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি চালু করতে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ১৫২ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

Advertisement

রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লিখেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অধীন সংস্থা ওয়েবেল গত বছর অগস্ট মাসের ৫ তারিখে একটি টেন্ডার ডেকেছিল। টেন্ডার নীতি মেনে বিভিন্ন সংস্থা আবেদন করেছিল। কিন্তু পরে কোন এক অজ্ঞাতক কারণে সেই টেন্ডারটি বাতিল করে দেয় ওয়েবেল। কিন্তু এ বছর ৩ জানুয়ারি ওই একই কাজের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে কর্মী বিনিয়োগ ও প্রশাসনিক দফতরের তরফে। দফতরের তরফে ওয়েবেল টেকনলজি লিমিটেড (ডাবলুটিএল)। এ ক্ষেত্রে পুরনো আবেদনকারীদের সঙ্গে নতুন দুই সংস্থা আবেদন করে। শুভেন্দু আরও লিখেছেন, নতুন এক সংস্থা আবেদনের ভিত্তিতে এই টেন্ডারটি পেয়ে গিয়েছে। প্রথম টেন্ডারে ১২০ কোটি টাকা প্রকল্প মূল্য বলা হলেও, পরে তা বেড়ে হয়েছে ১৫২ কোটি টাকা। ছ’মাসের মধ্যে টেন্ডারের মূল্য ৩২ কোটি টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক।

তাঁর দাবি, ওয়েবেলের দেওয়া যে টেন্ডারটি বাতিল করা হয়েছিল, সরকারি নিয়মে তা আবারও খোলা উচিত ছিল রাজ্য সরকারের। এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেনিয়মের মাধ্যমে অন্য একটি দফতর মারফত টেন্ডার করিয়ে নতুন সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। শুভেন্দু আরও দাবি করেছেন, এই বরাত দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (আইপ্যাক)-র ঘনিষ্ঠ একটি সংস্থাকে। এই আইপ্যাক যারা ২০২১ সালে তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে ভোটে জেতাতে কাজ করেছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর ‘দিদিকে বলো’ যে কর্মসূচিটি তৃণমূল চালু করেছিল, সেই নম্বরটিকে পুনরায় ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কর্মসূচি শুরু করতেই গত বছর ওয়েবেলের টেন্ডারটি বাতিল করেছিল রাজ্য। আইপ্যাককে এই কাজের বরাত পাইয়ে দিতেই নতুন দফতর থেকে নতুন ভাবে টেন্ডার করা হয়েছে। এই দুর্নীতিতে বড় অঙ্কের কাটমানি পাবে শাসকদল, এমনটাই অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। সঙ্গে তাঁর আরও অভিযোগ, এই টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ২০২৪ সালের লোকসভা ও ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে পরার্মশদাতা হিসেবে কাজ করবে তাঁরা।

Advertisement

ইমেল মারফত রাজ্যপালকে চিঠিটি পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করব এই দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখে রাজ্যপাল মুখ্যসচিবকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর মতো কোন স্বশাসিত সংস্থাকে দিয়ে বিষয়টির তদন্ত করাতে বলবেন।’’ আগামী কয়েক দিন তিনি অপেক্ষা করে দেখতে চান, এর মধ্যে যদি এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত না শুরু হয় সে ক্ষেত্রে তিনি আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার অভিযোগের পাল্টা তৃণমূলের তরফে বিধানসভার উপমুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেছেন, ‘‘নিত্যনতুন গল্প তৈরি করে প্রায়শই মিডিয়ায় ভেসে থাকতে চাইছেন। অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন অসত্য। এটা দুর্ভাগ্যের বিষয়। এগুলো বলে বাজিমাত করা যাবে। মানুষ এগুলো ভালো ভাবে নেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement