সরব শুভেন্দু. ফাইল চিত্র।
করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা হবে কি হবে না প্রশ্নে জল্পনা থেমেছে মঙ্গলবার। কিন্তু মেলার কমিটি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ মিটল না। মেলায় নজরদারির কমিটি থেকে তাঁর নাম বাদ যাওয়ার পর বুধবার সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, রাজ্য সরকার তাঁকে ‘ভয় পায়’ বলেই কমিটিতে তাঁর নাম থাকা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল আদালতে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আদালত গঠিত কমিটির নজরদারিতে হবে সাগরমেলা। কিন্তু সেই মেলার কমিটিতে পূর্বঘোষণা মতো রাখা হচ্ছে না রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে। যে পদে, ঘটনাচক্রে রয়েছেন শুভেন্দু। সরাসরি রাজ্য সরকার না হলেও তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতা কবিরুল ইসলাম-সহ কয়েকজনের মামলার প্রেক্ষিতেই শুভেন্দুর নাম নতুন কমিটি থেকে বাদ যায়।
বুধবার কলকাতার সিমলায় স্বামী বিবেকানন্দের বসতবাড়িতে স্বামীজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতাকে সরকার ভয় পায়। তাই সাগরমেলার কমিটি থেকে আমার নাম বাদ দেওয়ার জন্য এত সওয়াল করেছে আদালতে!’’ একই সঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি ওই কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হইনি। কমিটিতে আমার নাম থাকা বা না থাকা নিয়ে আমি লালায়িত নই। রাজ্য সরকারের আপত্তিতে আদালত আমাকে রাখেনি। এতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। প্রধান বিচাপতির সিদ্ধান্তকে সম্মান করা উচিত।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার দাবি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। এর সঙ্গে আরও পাঁচটি মামলা যুক্ত হয়। সব মামলা একত্র করে হাই কোর্টে শুনানির পর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেখানে ছিলেন বিরোধী দলনেতা (শুভেন্দু)। কিন্তু পরে অন্য তিনটি মামলায় প্রশ্ন ওঠে, ওই কমিটিতে যে সব সদস্য রয়েছেন, তাঁরা কোভিড নিয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। ‘রাজনীতিক’ শুভেন্দু কেন কমিটিতে রয়েছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। পরে পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন করে তা গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুভেন্দুর বুধবারের কটাক্ষ নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন রাজ্যে মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ স(ববি) হাকিম। তাঁর কথায়, ‘‘ভয়-টয় নয়। রাজ্য সরকার কাউকে ভয় পায় না। পাওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। আমরা মনে করি, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিরই ওই কমিটিতে থাকা অনুচিত। তাঁর নাম যা খুশি হতে পারে। গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারিতে যে কমিটি তৈরি হবে, তাতে কেন কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকবেন! কলকাতা হাই কোর্ট নতুন যে কমিটি গড়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’’