বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও এখন তৃণমূল নেতা রাজীব বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না।’’ সেই দাবিকে সমর্থন করেন সম্প্রতি বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া জয়প্রকাশ।
গ্রাফিক—সনৎ সিংহ
নন্দীগ্রামে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিয়ে শনিবার প্রশ্ন তুলেছেন দুই তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার। ওই আসনে ফের ভোট গণনার দাবিও তোলেন। সঙ্গে সঙ্গে তার জবাব দেননি শুভেন্দু। রবিবার দুপুরে তৃণমূলকে আক্রমণও করলেন তিনি। শনিবারে করা তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠককে ‘প্রহসন’ বলেও উল্লেখ করেন শুভেন্দু। শনিবারই রাজীব, জয়প্রকাশের সঙ্গে কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমল দফতরে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেই সাংবাদিক বৈঠককে আক্রমণ করতে গাঁধীজির তিন বাঁদরের একটি ছবি পোস্টে করেছেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে পোস্ট করেছেন কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘উত্তম ও অধম’ কবিতার ছবি। লিখেছেন, ‘গতকালের তোলামুল দলের সাংবাদিক ‘প্রহসন’ থুড়ি সম্মেলন দেখে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত-এর ‘উত্তম ও অধম’ কবিতাটি মনে পড়ে গেল।’
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও এখন তৃণমূল নেতা রাজীব বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না।’’ সেই দাবিকে সমর্থন করেন সম্প্রতি বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘২ মে বিকেল ৫টায় আমি সাংবাদিক বৈঠক করে বলি মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি অন্য ফল হয়েছে। শুভেন্দুকে আমি যখন বলি, তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে? জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলেন, অনেক কিছু করতে হয়েছে।’’
কয়েক দিন আগেই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের ভোট প্রসঙ্গে বলেন, তাঁকে হারাতে সমঝোতা (অ্যাডজাস্টমেন্ট) করা হয়েছিল। তবে সেই সমঝোতা কারা করেছিলেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু তাঁর ভাষণে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু বলেছিলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যাঁরা ষড়যন্ত্র করেছিলেন, সেই ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত এখন মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা!’’ তার পরে পরেই শনিবার ভোট পর্বে বিজেপি-তে থাকা দুই নেতা নতুন অভিযোগ তুললেন। শনিবার শুভেন্দু কোনও জবাব না দিলেও বিজেপি-র তরফে বলা হয়েছিল, যাঁরা এ সব বলছেন তাঁদের পরিচয় মানুষ জানেন। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে এখনও ভাল কিছু পাননি রাজীব। সদ্য বরখাস্ত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন জয়প্রকাশ। তাই ওঁদের কথার কোনও জবাব দল দেবে না। এমন অভিযোগ নন্দীগ্রামের মানুষকেই অপমান।