মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
দলত্যাগী মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবারই রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হাই কোর্টে এসে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে মামলা দায়ের করেন।
সোমবার শুভেন্দু জানান, বিধানসভা ভোটে নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজেপি-র টিকিটে জেতা মুকুলের দলত্যাগ এবং তৃণমূলে যোগদানের পর প্রায় চার মাস হতে চললেও স্পিকার এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি বলেন, ‘‘আদলতের কাছে বিচার চেয়েছি। আইন কার্যকরের আবেদন জানিয়েছি। গোটা ভারতবর্ষে সব বিধানসভায় হয়। গত ১০ বছর ধরে এ দিক-ও দিক ৫০ জনকে করিয়েছে (দলবদল) কিন্তু কার্যকর হয়নি। আমরা আদালতের উপর আস্থাশীল।’’
মণিপুর বিধানসভার একটি দলত্যাগ-বিরোধী মামলায় আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দুর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, তিন মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বার বার সময় নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে। তাই আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, হয় এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে বলা হোক মহামান্য স্পিকারকে, নয়তো বিকল্প হিসেবে সরাসরি আদালতের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হোক, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, দলত্যাগী মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে বিজেপি-র আবেদন এখন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবেচনাধীন। গত ৩০ জুলাই এবং ২৩ সেপ্টেম্বর স্পিকারের কাছে শুনানিতে হাজির হননি মুকুল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ২৩ সেপ্টেম্বরের শুনানির বৈঠকে মুকুলের না আসার কারণ জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দেন তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। এর পরেই শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘প্রথমত, নির্মল ঘোষ এই চিঠিটি দিয়েছেন। তাই স্পষ্ট যে, মুকুল রায় এখন তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য। ফলে দলত্যাগ-বিরোধী আইন এখনই কার্যকর করা দরকার। দ্বিতীয়ত, মুকুল নিজে আসতে না পারলেও চিঠি দিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে পারতেন। তৃতীয়ত, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠির সঙ্গে মুকুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোনও নথি দেওয়া হয়নি।’’