সরকারি অর্থ ‘বাজে খরচ’ করার অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু, পাল্টা জবাব তৃণমূলেরও। ফাইল ছবি।
মিড ডে মিল প্রকল্পের টাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর ২৪ পরগনা সফরের বিল মিটিয়েছে প্রশাসন? নথি তুলে ধরে সরকারি অর্থ ‘বাজে খরচ’ করার অভিযোগ তুলেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। টুইটে তাঁর অভিযোগ, গত নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রীর দু’দিনের উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ সফরে প্রশাসনের খরচ হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। গোটা টাকাই আনা হয়েছে অন্য সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ তহবিল থেকে।
শাসক তৃণমূল অবশ্য শুভেন্দুকে প্রত্যাশিত ভাবেই পাল্টা আক্রমণ করেছে। তাদের প্রশ্ন, শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তাঁর জেলা সফরের খরচ আসত কোথা থেকে? পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর খোঁচা, ‘‘কোন খাতে কত খরচ, সেটা তো প্রশাসনিক বিষয়। কিছু নীতিগত বিষয় থাকে। তা কুৎসার আকারে পরিবেশন করা আপত্তিকর। শুভেন্দু যখন পর্যবেক্ষক থাকাকালীন হেলিকপ্টারে করে জেলায় ঘুরতেন, কোন খাত থেকে নিতেন? কেন নিতেন? শুভেন্দুই তো সবচেয়ে বেশি হেলিকপ্টার চেপেছেন!’’ এর পর কুণাল বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা যখন রাজ্য সফরে আসেন, তখন কোন খাত থেকে টাকা আনা হয়? কোনও না কোনও সরকারি খাত থেকে টাকা মেটানো হয়। এমন তো নয় যে, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে তা এটিএমের মাধ্যমে খরচ করা হয়!’’ অর্থাৎ, কুণাল সরাসরি ওই অভিযোগের বিরোধিতা করেননি। বরং তিনি যুক্তি এবং উদাহরণ দিয়ে বলতে চেয়েছেন, বিষয়টি ‘প্রশাসনিক’। শুভেন্দু তা নিয়ে ‘কুৎসা’ করছেন।
গত বছর নভেম্বরে হিঙ্গলগঞ্জ সফরে গিয়েছিলেন মমতা। শুভেন্দুর অভিযোগ, সেই সফরের জন্য যা খরচ হয় তা মেটানো হয়েছে মিড ডে মিলের মতো সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ থেকে। ওই দাবির সমর্থনে টুইটে বেশ কিছু নথিও তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁর সফরের খরচ তোলার জন্য স্কুল পড়ুয়াদের খাবারের থালায় ভাগ বসিয়েছেন। কী লজ্জা! মিড ডে মিলের তহবিল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে গত নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ সফরের খরচ মেটানো হয়েছে। এমনকি ‘এসসি, এসটি এবং ওবিসি’ (তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর জাতি) উন্নয়ন তহবিলের টাকাও নষ্ট করা হয়েছে তাঁর সফরের জন্য।’’
অন্য একটি টুইটে বিরোধী দলনেতার দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দু’দিনের হিঙ্গলগঞ্জ সফরে খরচ হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একেবারে উপরের তলা থেকে বিডিও স্তরের আমলারা নিয়মিত এক প্রকল্পের টাকা অন্যত্র খরচ করা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। কিন্তু শিশুর খাবারের থালা থেকে চুরি অকল্পনীয়! এ জন্যই বাংলার মিড ডে মিলের থালায় সাপ, টিকটিকি পাওয়া যায়।’’
শুভেন্দু যে নথি তুলে ধরেছেন তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। যদিও অনেকেরই ওই নথি দেখে সেগুলিকে সরকারি নথি বলে মনে হচ্ছে। ‘রিফ্রেশমেন্ট এবং গাড়ি ভাড়া’ বাবদ টাকা খরচের সারণি রয়েছে তাতে।