উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ।
রাজনৈতিক বিরোধিতার নামে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ। গত সপ্তাহে মমতাকে ‘শয়তান’ বলেছিলেন। সোমবার বলেছেন ‘নিষ্ঠুর হৃদয়’, ‘লঙ্কিনী’। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হাজার হাজার হিন্দুদের যারা মেরেছে, তাদের রক্ষা করছেন মমতা। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের সঙ্গে নেই। বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী শয়তানদের সঙ্গে রয়েছেন। ভারতে যদি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের থাকতে দেওয়া হয়, তবে দেশের সর্বত্র পাথর ছোড়া শুরু হবে কাশ্মীরের মতো।’’ মমতাকে আগামী বিধানসভা ভোটেই সরিয়ে দেওয়া হবে বলে দাবি করেন সুরেন্দ্র।
সুরেন্দ্রের কুকথা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে, তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশ মমতাময়ী বলে জানে। ওই বিধায়কের কাছে তাঁকে সার্টিফিকেট নিতে হবে না।’’ সেই সঙ্গে ফিরহাদের মন্তব্য, ‘‘একটা বিষয় দেখে ঘৃণা হয় যে, এই ধরনের জীবও রাজনীতিতে রয়েছে। আর তাদের ঠিকানা বিজেপির মতো একটি দল। এতেই নিজেদের পরিচয় তারা প্রকাশ করে দিচ্ছে।’’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কুকথা এই প্রথম নয়, আগেও এই কারণে নিন্দার মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথের দলের এই নেতাটি। বালিয়া লোকসভা এলাকার অধীন বৈরিয়ার বিধায়ক সুরেন্দ্র হিন্দুত্বের নামে মুসলিম-বিদ্বেষী কথা বলার জন্য কুখ্যাত। এখন সিএএ-বিরোধীদের পাকিস্তানি বা তাদের দালাল বলে যাচ্ছেন নিয়মিত। দলের তরফে শাস্তি তো দূর, সতর্কও করা হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রামগোবিন্দ চৌধরী সম্পর্কে বলেন, ‘‘ওঁর নাম পাল্টে ইসলাম গোবিন্দ বা গোবিন্দ খান করে দিন। তার পরে যারা পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে, তাদের পেনশনের বন্দোবস্ত করে দিন।’’ সমাজবাদী পার্টি এর প্রতিবাদ করেছে ইতিমধ্যে। তাদের দলের নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন রিজ়ভি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘ভাবনাচিন্তার নামগন্ধ নেই ওঁর মধ্যে। রামগোবিন্দজি জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেতা। সারা জীবন সংঘর্ষ করে এসেছেন। তাঁর প্রশ্নের সামনে জবাব খুঁজে পান না খোদ মুখ্যমন্ত্রী (যোগী আদিত্যনাথ)। এমন এক জন নেতার সামনে সুরেন্দ্র কী? বালি আর মদের অবৈধ এই কারবারিটি আসলে বয়ান বাহাদুর ছাড়া কিছু নয়।’’