দুই বিজেপি নেতার দাবি, ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরভোটের পর বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর ও শিলিগুড়ি পুরভোটেও তৃণমূলের জয়জয়কার। কোথাওই বিরোধীরা দাঁত ফোটাতে পারেনি। অথচ শিলিগুড়িতে বিধানসভা নির্বাচনেও প্রায় সব ওয়ার্ডে বিজেপি জিতেছিল। সেই বিজেপি-ও উড়ে গিয়েছে। ফল স্পষ্ট হতেই মুখ খুলেছেন, রাজ্য বিজেপি-র বর্তমান ও প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ। অন্য দিকে টুইটারে শাসকদলকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক জন সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। অন্য জন অভিযোগ আনলেন শাসকদল ও প্রশাসনের পারস্পরিক বোঝাপড়ার। আর এক জন টুইটারে ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখলেন, ‘লোকতন্ত্রের লজ্জা।’ রাজ্য বিজেপি-র অভিযোগ, চার পুরনিগমের কোথাওই সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়নি।
সোমবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে গিয়েছিলেন সুকান্ত। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ধৃতরাষ্ট্রের মতো কাজ করেছে। তারা কেন্দ্রীয় বাহিনী নেবে না আমরা জানি। কারণ, রাজ্য সরকার বারণ করেছে।’’ তিনি জানান, এই চার পুরসভার ফল নিয়ে বিজেপি হতাশ নয়। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে বলেই তাঁর দাবি। সুকান্তের কথায়, ‘‘পুরভোটে জনমত প্রতিফলিত হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। বিধাননগরে ভুয়ো ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে আদালতের জানতে চাওয়া উচিত, কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল?’’
সুকান্তের আরও অভিযোগ, বিজেপি-কে ঠেকাতে বামেদের তুলে ধরছে তৃণমূল। কলকাতা পুরভোটের ফল ঘোষণার পর যেমন অভিযোগ করেছিলেন, চার পুরভোটের ফল নিয়েও একই অভিযোগ করেছেন বালুরঘাটের সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘বামেদের প্রচারে লোক নেই। হাতে গোনা চার-পাঁচ জন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ভোট পেয়ে যাচ্ছে! এটা অবিশ্বাস্য। ছাপ্পা মারার সময় পাঁচটা তৃণমূলে দিলে দুটো বামে দিয়ে দিচ্ছে।’’
সোমবার বেলা গড়াতেই পুরভোটের ফল নিয়ে টুইট করেন শুভেন্দু অধিকারী।
ভিডিয়ো পোস্ট করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক লেখেন, ‘গণতন্ত্রের লজ্জা। এই ফলাফল প্রমাণ করে পুর নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।’
অন্য দিকে, চার পুর নিগমের নির্বাচনে সন্ত্রাসের প্রতিবাদ এবং বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার দাবি নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দফতরের সামনে সোমবার অবস্থান বিক্ষোভ করে বিজেপি। সেই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। চার পুরনিগমের ফল প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলে দিয়েছিলাম, ভোট হয়নি। ভোট লুঠ হয়েছে। আর ফলাফলেও দেখা গেল তাই। রাজ্য বিরোধীশূন্য করার জন্য গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিনও সব জায়গায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ভোট ঠিক মতো হয়নি। তাই ভোট বাতিল করার কথা বলেছিলাম। ফলাফলে সেটাই প্রমাণিত হল। আদালতে যাচ্ছি। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে।’’