সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার
দলের রীতি-নীতি মেনে চলতে হবে সকলকে। দলের কাছে সবার আগে শৃঙ্খলা। এই ভাষাতেই দলের বিদ্রোহীদের কড়া বার্তা দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবারই দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক পদ ছাড়ার জন্য ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানানোর পাশাপাশি সুকান্তর দাবি, দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে কি না সে প্রশ্নও তুলেছেন পদ্মের রাজ্য সভাপতি। ঘটনাচক্রে, রবিবারই নদিয়ার ১০ নেতা দলের বিভিন্ন পদ ছেড়ে রাজ্যনেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
রবিবারই একের পর এক উপনির্বাচনে দলের পরাজয়ের জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন গৌরীশঙ্কর। সঙ্গে ছিলেন বহরমপুরের বিধায়ক কাঞ্চন মৈত্র। তিনিও রাজ্য কমিটি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান। এ ছাড়াও দলের রাজ্য কর্মসমিতি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের দুই নেতা বাণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর চৌধুরী। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘দলের যে রীতি, নিয়ম সেটা মেনেই সকলকে চলতে হবে। দলের শৃঙ্খলা সবার আগে। কারও কোনও সমস্যা থাকলে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর পরেও খুশি না হলে রাজ্যের পর্যবেক্ষককে জানাতে পারেন। এর পরেও সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানাতে পারেন।’’
সাংবাদিক বৈঠক করে গৌরীশঙ্কর বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি ইচ্ছা মতো সংগঠন চালাচ্ছেন। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন লোকদের দায়িত্ব দিচ্ছেন। এ নিয়ে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। তাই আমার রাজ্য কমিটিতে থাকার কোনও অর্থই হয় না।’’ একই সঙ্গে দাবি করেন, নিজের পছন্দ মতো লোকদের মণ্ডল সভাপতি পদে বসানো হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘যে অভিযোগে অনেকেই পদত্যাগ করছেন, সেটা বাস্তবিক না হলে সন্দেহ হয় যে এর পিছনে অন্য কোনও বিষয় রয়েছে কি না। মণ্ডল সভাপতিদের নাম এখনও ঘোষণাই হয়নি। তার আগে তিনি জানলেন কী করে, তাঁর প্রস্তাব মানা হচ্ছে কি না?
বালিগঞ্জে জামানত জব্দ এবং দু’বার জেতা আসানসোলে বিপুল ভোটে পরাজয়ের পরে শনিবার সন্ধ্যাতেই রাজ্য নেতৃত্বকে ‘অপরিণত’ বলে আক্রমণ করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ তথা রাজ্যের অন্যতম সহ-সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। সরব হয়েছেন দলেরই সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কেন এতগুলো ইস্তফা একসঙ্গে, সেটা রাজ্য বিজেপির খুব গুরুত্ব সহকারে বিচার-বিশ্লেষণ করা উচিত।’
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত জানান, সৌমিত্র এবং অনুপম যে ব্যক্তিগত মতামত জানিয়েছেন, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কথা বলবেন।