Sayantan Bose

Sayantan Bose: ‘লেডি তালিবান’ বলে তোপের মুখে সায়ন্তন

বিজেপি নেতাদের ‘রুচিহীন’ মন্তব্য তাঁরা ছোট করে দেখছেন না বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৯:২৪
Share:

ফাইল চিত্র।

ভোটের আগে কখনও হাত-পা ভেঙে দেওয়া, কখনও আধা-সামরিক বাহিনীকে দিয়ে বুকে গুলি করা, কখনও সরাসরি শ্মশানে পাঠানোর নানা হুমকি দিতেন বিজেপি নেতারা। ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পরেও ধারা বদলায়নি! এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না-করে ‘লেডি তালিবান’ বলে কটাক্ষ করে বসলেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তাঁর ওই মন্তব্যকে ‘রুচিহীন এবং কুশিক্ষার পরিচায়ক’ বলে আখ্যা দিয়ে একযোগে নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম ও কংগ্রেস। শাসক তৃণমূলের নেতৃত্ব ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পাল্টা হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন।

Advertisement

বিধাননগরে রবিবার সকালে রাখিবন্ধনের একটি উৎসবে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বলেন, ‘‘লেডি তালিবান যদি দেখতে চান, কলকাতায় কালীঘাটে চলে আসুন! লেডি তালিবান দেখতে পাবেন। টিকিট লাগবে না!’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এখানে বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। বিরোধীদের কর্মসূচি করতে দেওয়া হয় না, মেরে রাস্তায় টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে আর তালিবান খুঁজতে কাবুল যাওয়ার দরকার কী?’’

সায়ন্তনের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে এ রাজ্যে সঙ্ঘ শিবিরের তাত্ত্বিক নেতারা কেউ মুখ খুলতে চাননি। রাত পর্যন্ত চেষ্টা করা হলেও জানা যায়নি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যও। বিজেপি সাংসদ তথা দলের মহিলা মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বোপরি এক জন মহিলাকে তালিবান বলা সমর্থন করছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তালিবানদের হাতে সব চেয়ে বেশি অপমানিত এবং হিংসাত্মক ভাবে নির্যাতিত মহিলারা। সেখানে কোনও মহিলাকে তালিবান বলা একেবারেই সমর্থন করি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে পশ্চিমবঙ্গে যে তালিবান কায়দায় শাসন চলছে, সেটাও ঠিক। এখানে যে ভাবে বিরোধীদের ভোট দিলে মারা হয়, তা তো তালিবান সংস্কৃতিরই প্রকাশ। কিন্তু তার জন্য মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ঠিক নয়।’’

Advertisement

বিজেপি নেতাদের ‘রুচিহীন’ মন্তব্য তাঁরা ছোট করে দেখছেন না বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ, জিভের উপরে এঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। বারবার একই জিনিস ঘটে চলেছে। রুচি নেই, সংস্কৃতি নেই। কী ভাবে কোন কথা বলতে হয়, জানেন না! তৃণমূলের তরফে বলছি, এঁরা সমুচিত শিক্ষা পাবেন!’’ তৃণমূলের লোকসভার সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘অভব্য, অসভ্য, অশিক্ষিত!’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চত্রবর্তীও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘শিক্ষা এবং সচেতনতার এমনই অভাব যে, ওঁরা জানেন না তালিবান হল নারী-বিদ্বেষী। ‘লেডি তালিবান’ বলে কোনও কিছু হয়ই না!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘তুলনা করতে হলে ওঁদের (বিজেপি) দাদার (মোদী) সঙ্গে করুন! যাদের মাথায় তালিবান ভাবনা ঘোরে সব সময়, তাদের ওই উদাহরণই মনে পড়ে!’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যার যেমন রুচি এবং শিক্ষা, তারা তেমন কথাই বলে। বিজেপি নেতাদের কাছে অন্য কিছু প্রত্যাশা করি না! বিজেপি এবং তৃণমূল নেতাদের শব্দদূষণে বাংলার মানুষ ক্লান্ত।’’

শত বিতর্ক ও সমালোচনাতেও সায়ন্তন অবশ্য তাঁর বক্তব্যে অনড়। তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার কী আছে? মানসিকতা তো তালিবানিই!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement