সায়ন্তন বসু। —ফাইল চিত্র
বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুকে সভাস্থলে পৌঁছতে দিল না পুলিশ, তার আগেই গ্রেফতার করা হল তাঁকে। রবিবার তা নিয়েই কোচবিহারে বিজেপি-পুলিশ দিনভর টক্কর চলল। সায়ন্তনকে বিক্ষোভ দেখাতে যাওয়া তৃণমূলের কয়েকজন সমর্থককে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তা অস্বীকার করেছে।
এ দিন শীতলখুচি থানার গোসাইয়ের হাটে সভা ছিল সায়ন্তনের। সভা শুরুর কথা ছিল বেলা ১টায়। তার দুই ঘণ্টা আগে পুলিশ মাইকিং করে ১৪৪ ধারা জারির করার কথা জানিয়ে দেয়। সভায় পৌঁছতে না পেরে সায়ন্তন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি পুলিশকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়ে দেন, এর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আন্দোলনের কর্মসূচি করে ঘোষণা করা হবে। হাজার হাজার মানুষ নিয়ে শীতলখুচি পৌঁছবেন তাঁরা। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “আইন মেনে ব্যবস্থা হয়েছে।”
শীতলখুচি নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে টক্কর চলছে। লোকসভার ফল ঘোষণার পরে দেখা যায়, তৃণমূল বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছে। সে সময় সেখানে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী যাওয়ার চেষ্টা করলে রাস্তায় তাঁকে আটকে দেন বিজেপি সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত তিনি মাঝ রাস্তা থেকে ফিরে যান।
তার পরে গত তিন মাস থেকে ধীরে ধীরে সংগঠন পুনরায় কিছুটা শক্তিশালী করেছে তৃণমূল। গত কিছু দিন ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বারে বারে উত্তপ্ত হয়েছে শীতলখুচি। এনআরসি নিয়ে আন্দোলনে তৃণমূল ফের হারানো জমি অনেকটাই উদ্ধার করে বলে দাবি। এ দিন গোঁসাইয়ের হাটে বিজেপির সভা ছিল। সকাল ১০টা থেকেই ওই মাঠে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত হতে থাকে। এই অবস্থায় বেলা ১১টা নাগাদ ১৪৪ ধারা জারি করার মাইকিং শুরু হয়। তা জানার পরেও সায়ন্তন বসু,
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা সহ দলের জেলা শীর্ষ নেতারা শীতলখুচির উদ্দেশে রওনা হন।
মাথাভাঙার সিতাই মোড়ে পুলিশ বিজেপি নেতৃত্বকে আটকে দেয়। দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা হয়। জোর করে বিজেপি নেতারা শীতলখুচি যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই অবস্থার মধ্যে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব সভা চালিয়ে যান। পুলিশের ঘেরাটোপ থেকে মোবাইল ফোনে ওই সভায় বক্তব্য রাখতে দেখা যায় সায়ন্তনকে। তিনি বলেন, “যারা অনুপ্রবেশ করেছেন, তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে।” সেই সঙ্গে তিনি দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে পাশে থাকার বার্তা দেন। বিকেলের দিকে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।
অভিযোগ, থানা থেকে বেরোনোর সময় কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন। সেই সময় পুলিশ লাঠি চালায়। তাতে ৩ জন জখম হয়েছেন। মালতী রাভা
বলেন, “তৃণমূলের শাসনে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। পুলিশ রাজ্যের শাসক দলের হয়ে ক কাজ করেছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “আমি বাইরে আছি। তবে পুলিশ যা করেছে, তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্যেই করেছে।”