(বাঁ দিকে) কলকাতা হাই কোর্ট। বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির ভিডিয়ো নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ, তাঁর ছবি ব্যবহার করে ‘ভুয়ো’ ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। তার পর তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে। এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলার অনুমতি চেয়েছেন গঙ্গাধর। অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
সন্দেশখালির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল গত শনিবার। যা রাজ্য রাজনীতিতে কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। সন্দেশখালিতে ‘স্টিং অপারেশন’ বা গোপন ক্যামেরা অভিযান করে ওই ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছিল গঙ্গাধরকে। ভিডিয়োতে দেখা যায়, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের কাছে তিনি নিজে স্বীকার করছেন, সন্দেশখালির আন্দোলন সাজানো। টাকার বিনিময়ে সেখানকার মহিলারা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং অত্যাচারের ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে অবশ্য সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর আরও কিছু ভিডিয়ো পর পর প্রকাশ্যে আসে। যেখানে সন্দেশখালির মহিলারা দাবি করছেন, তাঁদের দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে, ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করানো হয়েছে। গঙ্গাধর কোন ভিডিয়োটির বিরোধিতা করে হাই কোর্টে গিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রথম ভিডিয়োটিতেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল। আদালতে নিরাপত্তার আবেদনও জানিয়েছেন গঙ্গাধর। আবেদনপত্রে তিনি জানিয়েছেন, তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
‘স্টিং ভিডিয়ো’ প্রকাশ্যে আসার পর অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য বিজেপি। কারণ, ওই ভিডিয়োতে গঙ্গাধরকে একাধিক বার শুভেন্দুর নাম বলতে শোনা গিয়েছে। তাঁর কথাতেই ধর্ষণের অভিযোগ এবং আন্দোলন সাজানো হয়েছে বলে ভিডিয়োয় দাবি করেছেন গঙ্গাধর।
ভিডিয়োটি প্রথম থেকেই ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। গঙ্গাধরের মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে কথা। এর সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে বিজেপি। গঙ্গাধরও ইতিমধ্যে তাঁর অভিযোগের কথা সিবিআইকে জানিয়েছেন। তার পর তিনি হাই কোর্টে মামলা করলেন।
ভিডিয়োটি ঘিরে প্রথম থেকেই সরব হয়েছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, এ ভাবে সন্দেশখালির আন্দোলন ‘সাজিয়ে’ দেশের কাছে বাংলার ভাবমূর্তি কলুষিত করেছে বিজেপি। মা-বোনেদের সম্মান নষ্ট করা হয়েছে। বিজেপির সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়েও কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসকদল। তাদের অভিযোগ, দোষ আড়াল করতেই কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে আশ্রয় চাইছে বিজেপি।