মঙ্গলবার সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে ‘খোলা হাওয়া’র রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের শুরুতেই ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত।
একেবারে প্রথমে কথা ছিল ‘খোলা হাওয়া’র রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অমিত শাহের সঙ্গে বক্তৃতা করবেন শুভেন্দু অধিকারীও। কিন্তু শেষে দেখা যায়, অনুষ্ঠান সূচিতে বক্তা একমাত্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজেপি শিবিরে বক্তাদের তালিকা নিয়ে যে নানা জল্পনা চলছে তা আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তবে বিরোধী দলনেতা একেবারেই কিছু বলেননি তা নয়। শাহের বক্তৃতার পরে ধন্যবাদজ্ঞাপনের দায়িত্ব পড়েছিল তাঁর উপরে। কিন্তু রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মঞ্চে থাকলেও শ্রোতার ভূমিকাতেই রইলেন।
মঙ্গলবার সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে ‘খোলা হাওয়া’র রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের শুরুতেই ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর পরে স্বাগত ভাষণ দেন সংগঠনের সভাপতি তথা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। এর পরে প্রধান বক্তা শাহ রবীন্দ্রনাথের জীবনের নানা দিক নিয়ে বলার পাশাপাশি কবির কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় শিক্ষানীতি বানিয়েছেন বলে দাবি করেন। এর পরে ছিল ধন্যবাদজ্ঞাপনের পালা।
প্রথমে যখন এই অনুষ্ঠানের কথা ঘোষণা করা হয়, তখন বলা হয়েছিল,অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর, গায়িকা সোমলতা আচার্যদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষে বক্তৃতা করবেন শাহ এবং শুভেন্দু। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিন, সোমবার যে আমন্ত্রণপত্র পাওয়া যায় তাতে বক্তা হিসাবে শুভেন্দুর নামই ছিল না। তাঁর নাম ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত-সহ অন্যান্যদের সঙ্গে। যাঁরা শুধু অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
কিন্তু কেন এমন হল তা নিয়ে মঙ্গলবার একাধিক বার প্রশ্ন করা হলেও বিজেপির কোনও নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। কেউ বলছেন, এটা অন্য সংগঠনের অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। কেউ বলছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্মসূচিতে বক্তার তালিকা যে কোনও মুহূর্তে পাল্টাতেই পারে। আবার ‘খোলা হাওয়া’র কর্তাদের কথাতেও ছিল নানা ধোঁয়াশা। তবে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, রাজ্য সভাপতিকে বাদ দিয়ে শুধুই বিরোধী দলনেতা শাহের অনুষ্ঠানে বক্তা করায় দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই শেষ মুহূর্তে বক্তার তালিকা থেকে শুভেন্দুর নাম বাদ যায়। আবার নাম বাদ যাওয়ায় শুভেন্দু শিবির ক্ষুব্ধ হবে ভেবে বিরোধী দলনেতাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এটা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সাধারণত, যে সংগঠনের অনুষ্ঠান হয় তারই কর্তারা ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তৃতা করে থাকেন। কিন্তু শুভেন্দু তো ঘোষিত ভাবে ‘খোলা হাওয়া’ সংগঠনের কর্তা নন। তখন অনেকে মনে করেছিলেন হয় তো, সুকান্ত-শুভেন্দু দু’জনকেই বক্তৃতার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁদের আশাপূরণ হয়নি। তবে আগে থেকেই ‘খোলা হাওয়া’ রাজ্য সভাপতিকে কম গুরুত্ব দিচ্ছে অভিযোগ তুলে বিজেপির অনেক নেতাই ঘোষিত ভাবে না হলেও এই অনুষ্ঠান বয়কট করেন। সেই অংশের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘আমাদের দলে বিভাজনটা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অমিত শাহজির উপস্থিতিতে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনেও সেটা বাদ গেল না।’’