—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘মিস্ড কল, গড়বে দল!’ এক সময় এই রাজ্যের উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তি বিজেপি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে এই স্লোগান তুলেছিল। অনেকটা পথ পেরিয়ে বিজেপি এখন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। তারা এ বার ছ’বছর পরে আবার সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে শুধুই ‘মিস্ড কলে’ থেমে থাকছে না। বরং, সদস্যদের বিষয়ে নিশ্চিত হতে ‘অ্যাপে’র সাহায্য নিচ্ছে তারা। কিন্তু তার পরেও সশরীরে মানুষের দরজায় গিয়ে সদস্য সংগ্রহ করার মধ্যে যে জনসংযোগ থাকে, সেই ঘাটতি পূরণ হওয়ার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সারা দেশে সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের হিসাব অনুযায়ী ইতিমধ্যেই আট কোটি সদস্য সংগ্রহ হয়ে গিয়েছে। তবে আর জি কর-কাণ্ডে দলকে আন্দোলনমুখী রাখতে সাময়িক ভাবে সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছিল। এ বার আগামী ২৩ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বিশেষ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফে। সূত্রের খবর, সেই উপলক্ষে আগামী ২৪ অক্টোবর রাজ্যে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ওই দিনই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের বিশেষ ‘অ্যাপ’ সামনে আনতে পারেন শাহ।
বিজেপি সূত্রের খবর, গত বার ‘মিস্ড কলে’র মাধ্যমে প্রায় ৮৫ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ হলেও তাঁদের ব্যাপারে কোনও তথ্যই দলের কাছে নেই। ফলে দলের ভোট বাড়লেও নিচু তলায় কর্মীর অভাব মেটেনি। তাই এ বার বিকল্প ভাবনা রয়েছে বিজেপির। দলীয় সূত্রের খবর, কোনও ব্যক্তি সদস্য হতে চেয়ে নির্দিষ্ট নম্বরে ‘মিস্ড কল’ দিলেই তাঁর মোবাইল নম্বরে একটি ‘লিঙ্ক’ চলে যাবে। সেই লিঙ্ক ধরে নির্দিষ্ট স্টোরে গিয়ে ওই অ্যাপ ‘ডাউনলোড’ করতে পারবেন সেই ব্যক্তি। তার পরে নিজের নম্বর দিয়ে নথিভুক্ত করলেই চলে আসবে নাম, ঠিকানা, লোকসভা, বিধানসভা, ওয়ার্ড অথবা গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম, বুথের নম্বর পূরণ করার সুযোগ। সেই সমস্ত তথ্য দিলে ওই ব্যক্তির মোবাইলে ধন্যবাদজ্ঞাপক বার্তা আসবে। এই ভাবে সদস্য হওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এ ছাড়াও, কোনও জনপ্রতিনিধি বা দলীয় নেতৃত্বের মাধ্যমে কেউ সদস্য হতে চাইলে ওই অ্যাপের মাধ্যমেই একটি ‘রেফারেল কোড’ ব্যবহার করে তা হওয়া যাবে।
বিভিন্ন নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট বাড়লেও নিচু তলায় যে দলের সংগঠন এখনও পোক্ত হয়নি, তা দলের অন্দরে স্বীকার করেন অনেক বিজেপি নেতাই। এ বার এই পদ্ধতিতে সদস্য সংগ্রহ হলে সদস্যদের সম্পূর্ণ তথ্য দলের কাছে থাকবে। ফলে, দলীয় নেতৃত্বের পক্ষে সেই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে তাঁকে দলের কর্মীতে রূপান্তরিত করার কাজ অনেক সহজ হবে বলে মত বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, গত লোকসভা নির্বাচনেও এই রাজ্যে বিজেপি দু’কোটির বেশি ভোট পেয়েছে। সেই হিসেব মাথায় রেখে অন্তত দু’কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, “ভোটের অঙ্ককে মাথায় রেখেই আমরা সদস্য সংগ্রহের কাজে নামব। আমাদের লক্ষ্য, রাজ্যের তিন থেকে চার শতাংশ ভোট নিজেদের দিকে ঘোরানো। সদস্য সংগ্রহের সংখ্যা থেকে ধারণা তৈরি হবে আমাদের প্রাপ্ত ভোটের কত শতাংশ সদস্যে রূপান্তরিত হল।”