BJP

BJP: নব্যদের দায়িত্ব দিয়ে ফাটল রোধের চেষ্টা

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া আর এক নেতাকে যুব সংগঠনকে আন্দোলনমুখী করতে বিশেষ সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৭:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের মাঝেই ফের গুরুত্ব পেতে চলেছেন নব্যরা। অর্জুন সিংহের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর দিলীপ ঘোষের মতো প্রবীণ নেতারা এঁদের দলে নিয়ে কী লাভ হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। সূত্রের খবর, এই আবহে যাতে ফের ভাঙন ঠেকানো যায়, কার্যত সেজন্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া দুই নেতাকে দলের শ্রমিক ও যুব শাখার সাংগঠনিক কাজ দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে স্বয়ং সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডাকে। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে রাজ্য দফতরে রাজ্য সভাপতির সঙ্গে অনলাইন বৈঠকে থাকবেন তিনি।

Advertisement

অর্জুনের দলত্যাগের জেরে মঙ্গলবারও বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে শ্রমিক সংগঠন দেখার দায়িত্ব পেয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া আর এক নেতাকে যুব সংগঠনকে আন্দোলনমুখী করতে বিশেষ সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমে কথা ছিল, মোদী সরকারের ৮ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষে জেলায় জেলায় কর্মসূচি স্থির হবে আলোচনায়। কিন্তু বড় হয়ে ওঠে, দল কী করে ধরে রাখা যায় সেই আলোচনা।

সূত্রের খবর, বৈঠকে বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, যুব সংগঠন যতটা শক্তিশালী, একটি দল ততটাই শক্তিশালী হয়। উল্লেখ্য, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সময় শুভেন্দু ছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি। তৃণমূল ছেড়ে আসা সৌমিত্র খাঁ যুব মোর্চার সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। বর্তমানে ইন্দ্রনীল খাঁ দায়িত্ব নিলেও ইদানিং যুব মোর্চাকে কার্যত রাস্তায় খুঁজেই পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে বাকি বিরোধী দলের যুব সংগঠনগুলি যখন রাস্তায় নামছে নিয়মিত। ফলে বৈঠকে যুব মোর্চার কাজ নিয়ে যথেষ্ট উষ্মা ছিল।

Advertisement

জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে আলাদা করে কথা বলেন শুভেন্দু-সুকান্ত। সেখানে বিষ্ণুপুরের সাংসদকে ডেকে বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন তাঁরা। এত দিন দলের হয়ে শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতেন অর্জুন। এ বার কার্যত শুভেন্দুর সুপারিশে সৌমিত্রের কাঁধে গেল এই দায়িত্ব। বৈঠকে থাকার কথা ছিল না তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন ওই নেতার। সূত্রের খবর, মধ্যাহ্নভোজের সময় হঠাৎই তাঁর ডাক পড়ে। সেখানেও মুখ্য ভূমিকা নেন বিরোধী দলনেতা। ওই নেতা বৈঠকে যোগ দিয়ে জানতে পারেন, দল চাইছে তিনি যেন যুব মোর্চাকে শক্তিশালী করতে বিশেষ ভূমিকা নেন। যদিও খাতায়কলমে যুব মোর্চা দেখার দায়িত্বে রয়েছেন জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাত। এরপর সৌমিত্র, শুভেন্দু, সুকান্ত ও ওই নেতার বৈঠক হয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, যে ভাবে সোমবার আদি নেতারা নব্যদের নিশানা করেছিলেন, তারই পাল্টা আদি নেতাদের সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হল। কারণ, ইন্দ্রনীল কিংবা জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতরা বিজেপির আদি নেতাদের ঘনিষ্ঠ।

তবে নব্য নেতারাও যে খুব স্বস্তিতে আছেন তেমন নয়। এ দিন তাঁরা কার্যত মুচলেকা দেওয়ার ঢঙে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তৃণমূল ফেরত বিজেপি সংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্জুন গিয়েছেন নিজের স্বার্থে। দরজা খোলা আছে। যাঁরা যেতে চান, চলে যেতে পারেন।" তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, "দরজা খুলে দিলে তো পুরো বিজেপি দলটাই উঠে যাবে।" যদিও এ দিন অর্জুন আবার বলেন, “সৌমিত্র আমার ভাইয়ের মতো। দেখুন না, আগামী দিনে আর কে কে আসে।” সৌমিত্র পাল্টা বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন তৃণমূল ছাড়বেন, সে দিন আমি ভাবতে পারি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement