BJP Bangla Bandh

বন্‌ধেই খুলল দরজা, টানা পথে বিজেপি

বন্‌ধ সফল করতে বুধবার সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। শ্যামবাজারে পাঁচ মাথার মোড় অবরোধ করতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিজেপির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪৪
Share:

বাংলা বন্‌ধে রেল অবরোধের প্রচেষ্টা বিজেপির সমর্থকদের। —ফাইল ছবি।

বারবার তাঁরা বলেন বন্‌ধ, ভাঙচুর, হিংসার রাজনীতিতে তাঁরা বিশ্বাস করেন না। কিন্তু সেই বন্‌ধের রাজনীতিতে রাস্তায় নামতেই হাসি ফুটল বিজেপি নেতৃত্বের মুখে। দীর্ঘ দিন পরে প্রায় সব স্তরের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নামলেন। কখনও পুলিশের সঙ্গে, কখনও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন, গ্রেফতার হলেন। যা থেকে ‘স্বস্তি’ পেয়ে দিনের শেষে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ডাক দিয়েছেন, এর পরে এক দিনে কালীঘাট, নবান্ন ও লালবাজার অভিযানের।

Advertisement

বন্‌ধ সফল করতে বুধবার সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। শ্যামবাজারে পাঁচ মাথার মোড় অবরোধ করতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিজেপির। সেখান থেকে গ্রেফতার হন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, দলের সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতা-কর্মী। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট মোড় থেকে বিক্ষোভ চলাকালীন গ্রেফতার হন সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। বড়বাজারে পুর-প্রতিনিধি বিজয় ওঝা ও উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল থেকে একের পর এক দোকান বন্ধ করার ‘অনুরোধ’ করা হয়। তাঁদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। মধ্য কলকাতার কোলে বাজারে দোকান বন্ধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি সজল ঘোষের সঙ্গে তৃণমূলের বিবাদ বাধে। ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে। প্রতিবাদে সেখানে উপস্থিত হন বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায়। তাঁর সঙ্গে পুলিশের বচসা ও ধস্তাধস্তি হয়। এক সময়ে সজলকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

কলকাতা ছাড়াও উত্তর থেকে দক্ষিণ বঙ্গের প্রতিটি জেলায় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিজেপি কর্মীরা বন্‌ধ ‘সফল’ করতে রাস্তায় নেমেছেন। জগদ্দলে সংঘাতে জড়িয়েছেন অর্জুন সিংহ, নোয়াপাড়ায় আক্রান্ত হয়ে কাদাপাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র। বন্‌ধের সমর্থনে রাস্তায় নেমে বাগুইআটিতে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন সুকান্ত এবং প্রাক্তন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। বিধাননগরে বন্‌ধের সমর্থনে মিছিল থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যকে।

Advertisement

বন্‌ধের দিন দলের কর্মী-সমর্থকদের থেকে এমন সার্বিক সাড়া পেয়ে উজ্জীবিত বিজেপি নেতৃত্ব। তাই আগামী দিন এই ঘটনা নিয়ে টানা রাস্তায় থাকতে চাইছেন তাঁরা। বন্‌ধ শেষে সুকান্ত বলেন, “আজকের বন্‌ধকে যে ভাবে সর্বাত্মক সমর্থন করেছেন, তার জন্য বাংলার জনগণকে নত মস্তকে প্রণাম জানাই। পুলিশকে ধন্যবাদ ও শুভনন্দন। বন্‌ধের সমর্থনে রাস্তায় নেমে ১৩৫০ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ২১০ জন আহত হয়েছেন। বন্‌ধকে বানচাল করতে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে দিয়ে যে ব্যবস্থা করেছিলেন, মানুষ তা ভেঙে দিয়েছে।”

আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে টানা ধর্না দেওয়ার কথা বিজেপির। মহিলা মোর্চার নেতৃত্বে সর্ব স্তরের মহিলা কর্মীদের কাল, শুক্রবার রাজ্য মহিলা কমিশন অভিযান করার কথা। প্রতিটি জেলায় আগামী ২ সেপ্টেম্বর জেলা শাসকের দফতর ঘেরাও হতে পারে। প্রতিটি ব্লকে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ধর্না দিতে পারে বিজেপি। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর প্রতিটি মণ্ডলে দু’ঘণ্টা প্রতীকী অবস্থান করার কথাও ঘোষণা করেছেন সুকান্ত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অবশ্য এখনও ‘অরাজনৈতিক’ আন্দোলনের পক্ষেই সরব। তাঁর হুশিয়ারি, “যে ভাষায় আজ (মুখ্যমন্ত্রী) ধমকেছেন, এটা সরকার নাকি তালিবান, নাৎসি, জন কিম! আজ আমি সকলকে বলেছি, কোনও রাজনৈতিক পতাকা ছাড়া এক দিনে কালীঘাট নবান্ন ও লালবাজার অভিযান করুন। ছাত্র সমাজকে বলব, বিধানসভা অভিযান করুন। ভিতরে বিজেপি বিধায়কেরা বুঝে নেবেন।”

পাল্টা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বিরোধী দলনেতা উস্কানিমূলক কথা বলছেন। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফাঁসি চাই। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সদিচ্ছা দেখিয়ে বিধানসভায় বিল আনবেন বলছেন। অসুবিধা কোথায়? তা না করে এর বাড়ি যাও, ওর বাড়ি যাও, এই ঘেরাও করো। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা চাইছেন, বাংলায় অশান্তি হোক। আর বাংলার নেতারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement