শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার জেলায় কিছুটা অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। শুভেন্দুর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামের দুই নেতা শনিবার পদ ছেড়েছেন। জানা যাচ্ছে, ওই দিনই পাঁশকুড়ার চার বিজেপি নেতাকে বহিষ্কার করেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সিন্টু সেনাপতি-সহ ওই চার জন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
নন্দীগ্রামের স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দলীয় পদে ইস্তফার কথা শনিবার জানিয়েছিলেন বটকৃষ্ণ দাস এবং জয়দেব দাস।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় নন্দীগ্রামে দলের আহ্বায়ক ছিলেন বটকৃষ্ণ। আর ওই সময় নন্দীগ্রাম-১ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি ছিলেন জয়দেব। আর ইস্তফার দেওয়ার সময় বটকৃষ্ণ ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চার আহ্বায়ক এবং যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য। আর জয়দেব চণ্ডীপুর-২ মণ্ডলের আহ্বায়ক এবং তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য। এই ইস্তফা নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
শুভেন্দুর নিজের বিধানসভা এলাকায় এই পদত্যাগ ঘিরে কাটাছেঁড়ার মধ্যেই সিন্টুদের বহিষ্কারের নির্দেশ এসেছে। গত অগস্টে বিজেপির জেলা সভাপতির উপর হামলার প্রেক্ষিতেই এই পদক্ষেপ বলে দলীয় সূত্রে খবর। ওই সময় মেচগ্রামে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতার উপর আগ্নেয়াস্ত্র ও লোহার রোড নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছিল সিন্টু ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় সিন্টু-সহ পাঁশকুড়ার সাত বিজেপি নেতাকে শো-কজ় করে দল। সিন্টু বাদে বাকিরা জবাব দিয়েছিলেন। তার পরেই শনিবার সিন্টু সেনাপতি, প্রতীক পাখিরা, কৌশিক জানা ও উত্তম সেনাকে দল থেকে বহিষ্কার করে রাজ্য বিজেপি।
সিন্টু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিম কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। বর্তমানে দলের স্টেট ইউনিয়নের কনভেনর ছিলেন সিন্টু। প্রতীক যুব মোর্চার ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষক পদে ছিলেন। উত্তম ছিলেন জেলা কমিটির সদস্য। আর কৌশিক পাঁশকুড়া শহর বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অগস্টে সিন্টু ও তাঁর দলবল আমার ও আরও কয়েক জন নেতার উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। রাজ্য নেতৃত্ব তদন্ত করে অভিযোগের সারবত্তা খুঁজে পেয়েছেন। তাই সিন্টু-সহ চার জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
সিন্টুর অবশ্য দাবি, ‘‘এ ধরনের কোনও চিঠি হাতে পাইনি।’’ আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের কটাক্ষ, ‘‘এ সবই বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। ওদের জেলা সভাপতি বলছেন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিল সিন্টুরা। এটাই তো বিজেপির সংস্কৃতি।’’