বিজেপি নেত্রী সুনীতা ঝাওয়ারের (বাঁ দিকে) সেই লিফলেট।
ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী কমলাসনা। কিন্তু বঙ্গে সেই পদ্ম এখন বিশেষ রাজনৈতিক জল্পনার কেন্দ্রে। গৃহলক্ষ্মীদের আর্থিক সহায়তা দিতে রাজ্য সরকার যে-প্রকল্প হাতে নিয়েছে, সেই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ তৃণমূল নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। কিন্তু এক বিজেপি নেত্রীর তরফে হিন্দিতে ছাপানো সেই প্রকল্পের লিফলেট বা প্রচারপত্রের দু’পাশে ছবি পদ্মের! যা এ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রতীক।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভূয়সী প্রশংসা করে তাতে মহিলাদের যোগ দিতে বলে প্রচারপত্র বিলি করছেন কলকাতার বিজেপি নেত্রী, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সুনীতা ঝাওয়ার। ওই প্রকল্পে সাধারণ গৃহবধূদের মাসে ৫০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও জনজাতিভুক্ত বধূদের এক হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। সুনীতা বুধবার বলেন, ‘‘আমার এলাকায় (বড়বাজার) বেশির ভাগ মানুষ হিন্দিভাষী। আমি ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর হিসেবে মানুষকে জানাতেই লিফলেট ছাপিয়ে প্রচার করছি। তিন দিন ধরে নিজের ওয়ার্ডে প্রায় ২০০ প্রচারপত্র বিলি করেছি।’’
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা তো রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের সমালোচনা করছেন। আপনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য প্রচার করছেন কেন? ‘‘সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার চেষ্টা করছি। এতে দোষের কী আছে,’’ পাল্টা প্রশ্ন বিজেপি নেত্রীর।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘সুনীতা তো ভাল কাজই করেছেন। আমরা চাই, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে সচেষ্ট হোন। কেন্দ্রীয় প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত, কিসান সম্মান নিধি চালু করতে দেয়নি তৃণমূল সরকার। লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে আমাদের নীতিগত আপত্তি নেই। আমাদের অভিযোগ, প্রকল্প রূপায়ণে দুর্নীতি হচ্ছে। দুর্নীতিমুক্ত ভাবে প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পারলে ভালই।’’
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা সকলে পায় না। স্বাস্থ্যসাথী সকলে পায়। বিজেপি জনপ্রতিনিধিরা দেখছেন, রাজ্যের প্রকল্পগুলো ভাল, মানুষ নিচ্ছেন। সুতরাং তাঁরা তার বাইরে থাকবেন কী করে? তাঁরাও প্রকল্প রূপায়ণে হাত লাগাচ্ছেন।’’