BJP

চোপড়ায় জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপিই ষড়যন্ত্র করেছিল: পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার পরে পরিবার ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ আনেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৬:১৭
Share:

চোপড়ায় গণরোষে পুড়ছিল সরকারি বাস। —ফাইল চিত্র।

চোপড়ায় জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় রং চড়িয়ে গন্ডগোলের পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি— প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনটাই মনে করছে ইসলামপুর জেলা পুলিশ। সেই সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ তারা উপরমহলে পাঠিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এই আন্দোলনে নেমে বুধবার গ্রেফতার হন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৃহস্পতিবার জামিন পেয়ে শিলিগুড়ি চলে যান। পাশাপাশি বিজেপির স্থানীয় কয়েক জন নেতাও ফেরার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার পরে পরিবার ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ আনেনি। ঘটনার কথা জানতে পেরে স্থানীয় বিজেপি নেতা বিজয় সিংহ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মেয়েটির দাদার বয়ান ও তথ্য অনুযায়ী পুলিশের দাবি, বিজয় যখন ওই দাদাকে ফোন করেন, তখন সকাল ৬টা ৫৩। তার পর ৭টা ২২ মিনিট পর্যন্ত দু’জনের মধ্যে দফায় দফায় ফোনে কথা হয়।

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেনের সঙ্গে মেয়েটির দাদা থানা থেকে বার হয়ে পার্টি অফিসে যান। মেয়েটির ও ছেলেটির মোবাইল এবং ছেলেটির সাইকেল তখনও তাঁদের কাছে। কিন্তু সেগুলি কোনওটাই তাঁরা থানাকে দেননি পুলিশের দাবি। পুলিশের দাবি, বিজেপির দফতরে বসে মোবাইল দু’টি ঘেঁটে বার্তাগুলি দেখা হয়। তার পরে সুরজিৎ মেয়েটির দাদাকে পরামর্শ দেন নিজেকে বিজেপির বুথ সভাপতি বলে পরিচয় দিয়ে এটি যে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা, সেটা সবাইকে জানাতে। পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই এলাকায় বিজেপির বুথ সভাপতি আসলে বিজয় সিংহ নিজেই।

Advertisement

পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই সময়ে বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন। দেখা যায়, বিজয় দলের জেলা সম্পাদক সুবোধ সরকারকে ৮টা ১৩ থেকে পরপর ফোন করেছেন। পুলিশের দাবি, প্রথমেই ঘটনার কথা সুবোধকে জানান তিনি। তার পরে সুবোধের সঙ্গে জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেনের ফোনে কথা হয়। পুলিশের হিসেব মতো প্রথম কলটি হয় ৮টা ৩৮ মিনিটে। সুরজিতের সঙ্গে এর পরে বিজেপি জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ির ফোনে কথা হয়। প্রথম ফোনটি হয় ৯টা ৩ মিনিটে। পুলিশ সূত্রে দাবি, বিশ্বজিৎ আবার রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন ১০টা ৪৪ মিনিটে।

পুলিশের দাবি, পরপর ফোন কলগুলি দেখলেই বোঝা যাবে, কী ভাবে ৬টা ৫৩ মিনিটে ঘটনাটি প্রথমে জানার পরের পৌনে চার ঘণ্টার মধ্যে দলের রাজ্য নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে এটি নিয়ে। পুলিশের বক্তব্য, দু’টি মোবাইল দেখার পরে যদিও স্পষ্ট হয়ে যায় এটি যুগলে আত্মহত্যার ঘটনা, তার পরেও বিজেপির ইসলামপুর, রায়গঞ্জ এবং কলকাতার নেতৃত্ব এলাকায় লোক খেপিয়ে গোলমালের পরিকল্পনা করেছিলেন। পুলিশ জানায়, সুবোধ সরকার ও অসীম বর্মণ গা-ঢাকা দিয়েছেন। দলের জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করলেই জানতে পারবে মেয়েটি আমাদের কার্যকর্তার পরিবারের সদস্য। তবে আমজনতার উপরেও যদি নির্যাতন হয়, আমরা সব সময় তাঁদের পাশেই দাঁড়াই।’’ জামিনে মুক্তির পর শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে রাজু বলেন, ‘‘আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement