BJP

তিন দিনের জেলা সভাপতি! যাদবপুরের কুন্তলকে দায়িত্ব রবিবার আর বুধেই অপসারণ রাজ্য বিজেপির

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার চারটি লোকসভা এলাকা অনুযায়ী বিজেপির চারটি সাংগঠনিক জেলা। ইতিমধ্যে দুই সভাপতিকে নিয়েই দলের ভিতরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে আচমকাই যাদবপুরের জেলা সভাপতি বদল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৪১
Share:

তিন দিনেই কুন্তল চৌধুরীকে সরালেন সুকান্ত মজুমদার। — ফাইল চিত্র।

সদ্যই নতুন সাংগঠনিক জেলা যাদবপুর তৈরি করেছে রাজ্য বিজেপি। গত রবিবার তার প্রথম সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল কুন্তল চৌধুরীর নাম। তিনি দায়িত্বও নিয়ে নেন। এর পরে বুধবার বিকেলে আচমকাই রাজ্য বিজেপির পক্ষে জানানো হয়েছে, যাদবপুরের জেলা সভাপতি মনোরঞ্জন জোদদার। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে কেন জেলা সভাপতি বদল, তা নিয়ে বিজেপির পক্ষে কিছু জানানো হয়নি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ সাংগঠনিক এবং দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’ আর অপসারিত ‘তিন দিনের সভাপতি’ কুন্তল বলেন, ‘‘আমি কিছুই জানি না। অনেকের মতো আমিও অবাক। নিশ্চয়ই দল আমাকে অন্য কোথাও কাজে লাগানোর কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে কুন্তল নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্য বিজেপি সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিটি লোকসভা এলাকাকে একটি করে সাংগঠনিক জেলা করা হবে। এত দিন রাজ্যের বাকি সব জায়গায় থাকলেও সেটা ছিল না মুর্শিদাবাদ জেলায়। উত্তর ও দক্ষিণ হিসাবে মুর্শিদাবাদ জেলা ছিল। রবিবারই লোকসভা হিসাবে নতুন তিন সাংগঠনিক জেলা মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর ও জঙ্গিপুর গঠন হয়। তিন জেলা সভাপতির নামও ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গেই তৈরি হয় যাদবপুর জেলা।

এত দিন বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাংগঠনিক বিভাজনে যাদবপুর বলে আলাদা কোনও জেলা ছিল না। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনও পর্যন্ত বিজেপির সংগঠন দুর্বল। দীর্ঘ দিন পূর্ব ও পশ্চিম নামে দু’টিই ভাগ ছিল জেলার। পরে ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর, মথুরাপুর আলাদা সাংগঠনিক জেলা হয়। তবে যাদবপুর আলাদা জেলা ছিল না। এই লোকসভা এলাকার পাঁচটি বিধানসভা ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) জেলার মধ্যে। যাদবপুর ও টালিগঞ্জ ছিল কলকাতা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায়। এ বার সাতটি বিধানসভা এলাকা নিয়ে যাদবপুর লোকসভা এলাকার জন্য আলাদা জেলা হয়েছে। কুন্তলের নামও সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

একটা সময়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন করা কুন্তল প্রথমে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বুথ সভাপতি দিয়ে দায়িত্ব শুরু। মণ্ডলের সহ-সভাপতি হয়ে জেলা সভাপতি হন। তার আগে রাজ্য বিজেপির হ্যান্ডলুম শাখায় ছিলেন বস্ত্র ব্যবসায়ী কুন্তল।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলারই দুই লোকসভা এলাকার সাংগঠনিক জেলা সভাপতিকে নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত রবিবার দলের সাংগঠনিক জেলা ডায়মন্ড হারবারের সহ-সভানেত্রী সবিতা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয় সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের বিজেপি দফতরে। জেলা সভাপতি অভিজিৎ সর্দারের বিরুদ্ধে আলোচনা না-করে ২০ জন মণ্ডল সভাপতি বদলের অভিযোগ ছিল। সোমবারও ওই দফতরে বিক্ষোভ দেখান দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার কর্মীরা। জেলার নতুন সভাপতি নবেন্দুসুন্দর নস্কর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের টিকিট না-পেয়ে নির্দল হিসাবে লড়াই করার পরেও কেন দায়িত্ব পেলেন তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। এ বার একই জেলার যাদবপুর লোকসভা এলাকা ঘিরে জল্পনা তৈরি হল বিজেপির অন্দরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement