তৃণমূলের প্রচারে বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্র সিংহ। নিজস্ব চিত্র
মানুষের জন্য যে কাজগুলি করবেন ভেবে তিনি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই তাঁর বিরোধী তৃণমূল প্রার্থী গোপাল রাউত তা করে ফেলেছেন। তাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনিই যোগ্য মানুষ। তাঁর সমর্থনেই ভোট প্রচার করবেন বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্র সিংহ। অভিনব এই ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের ভাটপাড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড।
রবীন্দ্র শুধু মুখে বলে ক্ষান্ত থাকেননি। তিনি গোপালকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়ে নিজের টাকায় রীতিমতো লিফলেট ছাপিয়ে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁকে দেখা গেল ওয়ার্ডে ওই লিফলেট বিলি করতে। কোথাও আবার গোলাপি লিফলেট নিজেই সাঁটালেন দেওয়ালে।
ভাটপাড়া বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্য সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহের নিজের গড় বলে পরিচিত। সেখানে প্রথম ধাক্কা ছিল তাঁর ভাইপো তথা ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌরভ সিংহের বিজেপি থেকে দলত্যাগ। সৌরভ-সহ সাংসদের তিন আত্মীয় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অর্জুনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। রবীন্দ্রও সৌরভ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রবীন্দ্র বলেন, ‘‘আমি নতুন করে আর কী কাজ করব? তৃণমূলের গোপালবাবুই তো অনেক উন্নয়নের কাজ করেছেন। মানুষের স্বার্থে
ওঁর পাশে থাকাটাই শ্রেয় বলে মনে হয়েছে আমার। তাই আর প্রতিদ্বন্দিতা করছি না।’’ রবীন্দ্রর কথা শুনে গোপালের মুখে চওড়া হাসি। বলেন, ‘‘জোর করে বিজেপি ওঁকে দাঁড় করিয়েছিল। উনি বুঝতে পেরেছেন মানুষ কী চায়।’’
তবে নির্বাচনের আগে এই ভাবে প্রার্থীরা দল বদল করায় বা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পিছনে সন্ত্রাস, ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক
জেলা সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সীমাহীন সন্ত্রাসের কারণে রবীন্দ্রবাবু ভেঙে পড়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। রাজ্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।"
যদিও তৃণমূলের থেকে কোন চাপ বা ভয় দেখানো হয়নি বলেই এ দিন সাফ জানান রবীন্দ্র। সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘এঁরা সকলেই ভাটপাড়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সৌরভ সিংহের অনুগামী। বিজেপির উপরে আস্থা হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নে সামিল হতেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।’’