সোমে মুখোমুখি হবেন দিলীপ ও শুভেন্দু। ফাইল চিত্র।
সংসদের অধিবেশন চলায় বিজেপির সব সাংসদই এখন দিল্লিতে। তার মধ্যেই সব সাংসদ এবং রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর, সোমবার সেই বৈঠক হওয়ার কথা। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের ডাকা বৈঠকে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনশলও থাকবেন। রাজ্য সংগঠনের প্রধানদের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও ওই বৈঠকে থাকার কথা। বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এবং দুই সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য এবং আশা লাকড়াকেও।
সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পরেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। সেই লক্ষ্যেই দলের নীতি নির্ধারণের লক্ষ্যে ওই বৈঠক বলে বিজেপির একটি সূত্রের খবর। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সে ভাবে বাংলায় নজর দেননি। মালব্য আগে থেকে দায়িত্বে থাকলেও নতুন করে বনশল, পাণ্ডে এবং লাকড়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশিই রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সহকারী হিসাবে এসেছেন সতীশ ধন্দ। এঁরা সকলেই দিল্লির বৈঠকে থাকছেন। প্রথমে জানা গিয়েছিল দিল্লিতে দিলীপ ঘোষের বাসভবনে হবে ওই বৈঠক। পরে ঠিক হয় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের বাড়িতে ওই বৈঠক বসবে।
গত জুলাই মাসে হায়দরাবাদে বিজেপির সর্বভারতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনটি রাজ্য থেকে আসন বাড়ানোর লক্ষ্য নেবে দল। সেই তিন রাজ্যের মধ্যে তেলঙ্গানা, ওড়িশার পাশাপাশি রয়েছে বাংলাও। এর পরেই উত্তরপ্রদেশে সফল বনশলকে ওই তিন রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে বাংলায় কী ভাবে কাজ করা হবে, তা নিয়েই সোমবারের বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানাচ্ছেন বিজেপির রাজ্যনেতাদের একাংশ।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সফর করেছেন সুনীল, মঙ্গল, আশা। তাঁরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট আকারে জমাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্টে রাজ্য দলের বিভিন্ন ‘দুর্বলতা’র কথাও উল্লেখ করেছেন পর্যবেক্ষকরা। সেই সব দুর্বলতা কাটাতে কী করা উচিত, তা নিয়েও দিল্লির বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। আলোচনা হতে পারে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সঙ্ঘাত রুখতে পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
অমিত শাহ থেকে শ শুরু করে জেপি নড্ডা তাঁদের প্রতিটি বাংলা সফরে বুথ স্তরের সংগঠন মজবুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই কাজ কতটা হয়েছে, কী ভাবে শেষ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে দিল্লির বৈঠকে। ঠিক কী কী বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির পক্ষে জানানো না হলেও এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘দলের সাংসদদের নিয়ে উচ্চ নেতৃত্ব বসছেন। রাজ্য সভাপতি থেকে বিরোধী দলনেতা সেখানে হাজির থাকবেন। সব পর্যবেক্ষকেরও থাকার কথা। এটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ছোটখাট বিষয় নয়। কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতেই এই বৈঠক।’’
দিল্লিতে ওই বৈঠকের আগে আগামী শুক্রবার রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক হবে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার কলকাতায় না হয়ে ওই বৈঠক হতে পারে হুগলির ব্যান্ডেলে। সেখানে কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে এবং রাজ্যের শীর্ষ নেতারা কী ধরনের তথ্য-পরিসংখ্যান সংগ্রহ করবেন। তা থেকেও দিল্লির বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে কিছুটা আগাম আঁচ পাওয়া যেতে পারে।