যাদবপুর কাণ্ডে আরও একটি জনস্বার্থ মামলার অনুমতি দিল হাই কোর্ট। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মাওবাদী কার্যকলাপ চলে বলে অভিযোগ করল বিজেপি। সোমবার তারা এ ব্যাপারে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জনস্বার্থ মামলার অনুমতি চায়। আদালত তাদের মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় প্রথম থেকেই সরব বিজেপি। রবিবার দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ যাদবপুরের প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, এই সব সমাজ বিরোধীদের মাথা থেঁতো করে দেওয়া উচিত। এমনকি, ‘বুটের লাথি মেরে ঠান্ডা করে দেওয়ার’ নিদানও দেন দিলীপ। আবার দিন কয়েক আগে যাদবপুরে বিজেপি যুব মোর্চার একটি অনুষ্ঠান থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ‘ইনকিলাবি স্লোগান’কে কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। যাদবপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিভাবকত্বে ‘দেশবিরোধী শক্তি’ এবং ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ প্রতিপালিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। এর পরই রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী সোমবার যাদবপুর নিয়ে দুই নেতার সুরে সুর মিলিয়ে অভিযোগ জানান কলকাতা হাই কোর্টে।
মামলাকারীর আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি সোমবার এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁর অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাওবাদী কার্যকলাপ চলছে। তাই যাদবপুরের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্ত হওয়া উচিত। আদালতকে তিনি জানান, বিরোধী দলনেতার সামনেই মাওবাদী বলে দাবি করেছেন যাদবপুরের ছাত্ররা। একই সঙ্গে আজাদি স্লোগানও দিতে শোনা যায় তাঁদের। যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তাই এই বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত হওয়া দরকার জানিয়ে জনস্বার্থ মামলার অনুমতি চান তরুণজ্যোতি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ওই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতি পূর্বেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে র্যাগিংয়ের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এ সপ্তাহেই সেই মামলার শুনানি হতে পারে। সোমবার বিজেপির তরফেও যাদবপুর কাণ্ডে আরও একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করার রাস্তা খুলল।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। পরের দিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তার। বাংলা বিভাগের ওই ছাত্রের বাড়ি নদিয়ায়। দিন কয়েক আগেই যাদবপুরের মেন হস্টেলের এ২ ব্লকে এক আবাসিকের ‘অতিথি’ হিসাবে থাকতে শুরু করেছিল সে। পুলিশের রিপোর্টে জানা যায় হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে কোনও ভাবে পড়ে গিয়েছিল সে। এই ঘটনায় ছাত্রটির পরিবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ আনে হস্টেল আঁকড়ে পড়ে থাকা প্রাক্তন ছাত্রদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় প্রাক্তনী এবং পড়ুয়া মিলিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।