গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোট শেষ হওয়ার পর সংগঠনে রদবদল ঘটাল বিজেপি। শুক্রবার ২৪টি রাজ্যের পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছে পদ্মশিবির। তবে এই পর্যবেক্ষকদের তালিকায় বাংলার কেউ নেই। নাম নেই কোনও বাঙালিরও।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা নতুন করে সংগঠনের দায়িত্ব বণ্টন করেছেন ২৪ রাজ্যে। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা হেডকোয়ার্টার ইনচার্জ অরুণ সিংহের সই করা যে তালিকা বার করেছে বিজেপি, তাতে ২৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। আন্দামান নিকোবর, অরুণাচল প্রদেশ, বিহার, ছত্তীসগঢ়, দমন-দিউ, গোয়া, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু এবং কাশ্মীর, ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ওড়িশা, পুদুচেরি, পাঞ্জাব, সিকিম, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির জন্য পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে বেশ কয়েক জনকে সাংগঠনিক কাজে বড় দায়িত্বে উঠিয়ে এনেছে বিজেপি। যেমন, সম্বিত পাত্র। ওড়িশায় ভাল ফলের পর সেই রাজ্যের পদ্মশিবিরের বড় মুখকে উত্তরাখণ্ডের সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওড়িশায় পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজয়পাল সিংহ তোমর এবং সুশ্রীলতা উসেন্দিকে। বিজয়পাল উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। আগেও তিনি ওড়িশার দায়িত্ব সামলেছেন। বিহারে বিজেপির পর্যবেক্ষক বিনোদ তাওড়ে, সহ-পর্যবেক্ষক করা হয়েছে সাংসদ দীপক প্রকাশকে। গোয়া এবং জম্মু-কাশ্মীরে পর্যবেক্ষক হয়েছেন আশিস সুদ। হরিয়ানায় পর্যবেক্ষক সতীশ পুনিয়া এবং সহ-পর্যবেক্ষক সুরেন্দ্র সিংহ নগর, হিমাচল প্রদেশে পর্যবেক্ষক শ্রীকান্ত শর্মা, সহ-পর্যবেক্ষক সঞ্জয় টন্ডন। এ ছাড়া কর্নাটকের জন্য বিজেপি পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষক করেছে সাংসদ রাধামোহন দাস আগরওয়াল এবং সুধাকর রেড্ডিকে। ঝাড়খণ্ডে পর্যবেক্ষক হয়েছেন সাংসদ লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ী।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, বাংলার কাউকে এ বার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেয়নি বিজেপি। উত্তরাখণ্ডে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় বার হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিদায়ী সাংসদ হেরে যান তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এক সময় বিহারের পর্যবেক্ষকের পদ সামলেছেন। এ ছাড়া বাংলা থেকে অনুপম হাজরা বিহারের সহ-পর্যবেক্ষক ছিলেন। কিন্তু এ বার বাংলা থেকে কোনও বিজেপি নেতার নাম নেই। তা ছাড়া বাংলার জন্য কোনও পর্যবেক্ষক এবং সহ-পর্যবেক্ষকের নাম ঘোষণা করেনি বিজেপি।
লোকসভা ভোটে বাংলার ফলে আশাহত হয়েছে বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে সুনীল বনসলকে বাংলা, ওড়িশা ও তেলঙ্গানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বাংলার পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছিল বিহারের বিজেপি-জোট সরকারের মন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডেকে। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন অমিত মালবীয়। পরে একই পদে যুক্ত করা হয় রাঁচীর প্রাক্তন মেয়র আশা লকড়াকে। এ ছাড়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে আনা হয় সতীশ ধন্ডকে। কিন্তু ভোটের ফল দেখে দলের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে যে তাঁরা বাংলার মাটিকে চিনতে সক্ষম হননি।