—ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। আর বাংলায় তারা প্রার্থী হিসাবে বেছে নিল ‘পরীক্ষিত’ নেতা শমীক ভট্টাচার্যকেই।
রাহুল সিংহের সময় থেকেই রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক। সুবক্তা হিসাবে পরিচিতি আছে তাঁর। বিজেপির শীর্ষ নেতারাই বলেন, যে কোনও বিষয়ে দলের অবস্থানও সবসময় স্পষ্ট করে জানাতে পারেন শমীক। পাশাপাশি, তাঁকে কখনও দলবিরোধী কথা বলতে শোনা যায়নি। তাঁর সতীর্থরা তাই মনে করছেন, দীর্ঘদিন দলের প্রতি তিনি যে আনুগত্য দেখিয়ে গিয়েছেন, তারই পুরস্কার পেলেন শমীক।
শমীকের আগেও হাবড়়া আসন থেকে বিজেপির বাদল ভট্টাচার্য জিতেছিলেন। তবে তখন বিজেপির সঙ্গে জোট ছিল তৃণমূলের। একক ভাবে বাংলায় বিজেপির প্রথম বিধায়ক হন শমীকই। বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। তবে এর পর গত লোকসভা নির্বাচনে দমদম এবং বিধানসভা নির্বাচনে রাজারহাট নিউটাউনে প্রার্থী হলেও জিততে পারেননি। তাই রাজ্যসভার মনোনয়ন দিয়ে শমীকের দীর্ঘ দিনের অপ্রাপ্তি মেটানো হল বলেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবশ্য বরাবরই শমীকের প্রতি প্রসন্ন। তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য গঠিত বিজেপির কমিটিতেও। মোট ৩৫টি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কমিটির কাজ হল বক্তা কী বলবে তা ঠিক করে দেওয়া। বিজেপির কোন নেতা কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন, তা-ও বলে দেবে এই কমিটি। আর এই কমিটিরই প্রধান করা হয়েছে শমীককে। এ ছাড়া বিজেপিতে কোনও প্রশিক্ষণ হলেও শমীক বরাবর ডাক পান তাত্ত্বিক বিষয়ে কথা বলার জন্য। তবে ইদানীং কিছুটা কোনঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন শমীক।
এর আগে আরও একবার বাংলা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ মনোনীত করতে পেরেছে বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭৫ আসনে জয়ের পরেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বিজেপি বাংলা থেকে দু’জনকে পাঠাতে পারবে রাজ্যসভায়। কিন্তু কয়েক মাস আগে যখন রাজ্যসভায় সাংসদ হিসাবে মনোনয়নের কথা হয়, তখন বেছে নেওয়া হয়েছিল কোচবিহারের রাজবংশীদের স্বঘোষিত রাজা অনন্ত মহারাজকে। তবে অনন্ত ছিলেন বাইরের লোক। বিজেপির নেতা নন। ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই যে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল, তা বুঝেছিলেন অনেকেই। এ বার অবশ্য সেই সব পরীক্ষা নিরীক্ষায় যাননি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এ বার দলের দীর্ঘদিনের অনুগত এবং সুবক্তা হিসাবে পরিচিত শমীককেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
রবিবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর শমীক বলেন, ‘‘দল আমাকে রাজ্যসভায় মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি দলের কাছে, আমার সংগঠনের কাছে কৃতজ্ঞ। এটা সম্ভব হয়েছে পশ্চিমবাংলার মানুষ আমাদের সেই সংখ্যা দিয়েছে, যাতে রাজ্যসভায় আমরা আরও সাংসদ পাঠাতে পারি। তাই পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে, দলের মতাদর্শে কাজ করব।’’
রবিবার অবশ্য বাংলা ছাড়াও উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের সাত জন এবং উত্তরাখণ্ড ও বাংলা থেকে এক জন করে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বিজেপির তরফে।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় অনবধানবশত লেখা হয়েছিল শমীক ভট্টাচার্য বিজেপির প্রথম বিধায়ক। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)