মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ মামলায় স্পিকারের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ বিজেপি। ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ মামলায় স্পিকারের ভুমিকায় খুশি নয় বিজেপি পরিষদীয় দল। তাদের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি। বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় বলেন, ‘‘এসব ক্ষেত্রে আমরা দেখি আদালত নির্দেশ দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেয়। সেই সময় মেনে চলা দরকার। মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট মুকুল রায়ের মামলার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দিয়েছিল। বিষয়টি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা উচিত ছিল। কিন্তু স্পিকার তা করেননি। এখন বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্ট দেখবে।’’ কল্যাণীর বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে আমরা আবেদন করেছিলাম স্পিকারের কাছে। বিচার না পেয়ে প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট ও পরে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু স্পিকার বিষয়টির নিষ্পত্তি না করায় যখন আবার বিষয়টি আদালতের সামনে আসবে তখন কেন বিলম্ব হচ্ছে তা জানতে চাইতেই পারে।’’
বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি, ১১ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট চার সপ্তাহের সময়ের মধ্যে বিষয়টি শেষ করতে বলেছিল। সোমবার চার সপ্তাহের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও মুকুল নিয়ে স্পিকার সিদ্ধান্ত জানাননি। তবে আগামী বুধবার ১১ মে আবারও বিধানসভায় স্পিকারের ঘরে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ মামলার শুনানি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি, শুনানি পাল্টা শুনানি করে তারা সব তথ্য প্রমাণ, নথি জমা দিয়েছে।তা সত্ত্বেও বিলম্ব হওয়ায় ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা।
তবে স্পিকার বিমান বলেছেন, ‘‘আমি বিষয়টি নিয়ে যথা সময়ে রায়দান করব। এখনও শুনানি শেষ হয়নি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শুনানির দিন রয়েছে। তা হয়ে গেলে শীঘ্রই আমি রায়দান করব। আমি আবারও দু’পক্ষকেই ডেকেছি। কারণ এখনও আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্নের জবাব পেলে আমি আমার মতো রায় দেব।’’
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের মামলায় রায়দান করেন স্পিকার। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আবেদন খারিজ করে তিনি জানান, মুকুল বিজেপিতেই আছেন। তাই তাঁর বিধায়কপদ খারিজ করা হচ্ছে না। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি পরিষদীয় দল। সেই মামলার শুনানিতে ১১ এপ্রিল দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি সংক্রান্ত মামলায় বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই ফের শুনানি করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার। মুকুলের আইনজীবী সায়ন্তক দাস দাবি করেছেন, বিজেপিতেই আছেন মুকুল। স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার কারণে ১১ জুন তিনি নিজের পরিচিতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। মুকুলের আইনজীবীর সেই দাবি মানতে নারাজ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১১ জুন তিনি তৃণমূল ভবনে গিয়ে শাসকদলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করে স্পিকারের কাছে একাধিক প্রমাণ দাখিল করেছেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক।