বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হল বিক্ষোভ। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে রাস্তা অবরোধ করল বিজেপি। আমপানে (প্রকৃত উচ্চারণে উম পুন) যাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙেছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক রং দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ঘেরাও করা হল বিডিও অফিস। পরে বিডিও এবং স্থানীয় ওসির যৌথ আশ্বাসে উঠল অবরোধ।
বিজেপির স্বরূপনগর (মেন) মণ্ডলের সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘যাঁরা মার্কামারা তৃণমূল নন, তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া সত্ত্বেও তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। সরকার যে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে, তা পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। কিন্তু মার্কামারা তৃণমূল সমর্থক ছাড়া আর কারও ফর্ম জমা নেওয়া হচ্ছে না।’’ ঝড়ে ঘরবাড়ি যাঁদের ভাঙেনি, তেমন তৃণমূল সমর্থকদের ফর্মও জমা নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু ক্ষতিপূরণ যাঁদের ন্যায্য প্রাপ্য, তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে— অভিযোগ বিজেপির।
এই সব অভিযোগের প্রতিকার চেয়েই সোমবার দুপুরে স্বরূপনগর বিডিও অফিসের সামনে বিজেপির বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে রাস্তা অবরোধ করা হয়। তার পরে বিডিও অফিস চত্বরে ঢুকে ঘেরাও করা হয়। বিজেপির পতাকা যদিও কারও হাতে ছিল না। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বিক্ষোভ দেখা এসেছেন, বিজেপি আসেনি, এমনই দাবি করা হচ্ছিল। তবে বিজেপির স্থানীয় নেতারাই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুন: দিলীপ, সুব্রত, মুকুল, রাহুল: সব শিবিরকে ঠাঁই দিয়ে নতুন কমিটি বিজেপির
বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভে যখন বিডিও অফিস প্রায় অবরুদ্ধ, তখন স্বরূপনগরের ওসি তুষারকান্তি বিশ্বাস বাহিনী নিয়ে সেখানে পৌঁছন। বিডিও বিপ্লব বিশ্বাস এবং ওসি তুষার বিশ্বাস যৌথ ভাবে কথা বলেন বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন প্রতিনিধির সঙ্গে। সকলের ফর্ম জমা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তাঁরা। পরে বিক্ষোভকারীদের তরফে জাননো হয়েছে যে, ক্ষতিপূরণের আবেদন যাঁরা জানাতে চাইছেন, মঙ্গলবার স্থানীয় পঞ্চায়েত দফতরে তাঁদের সকলের ফর্ম জমা নেওয়া হবে। যদি ফর্ম জমা নেওয়া না হয়, তা হলে বিডিও অফিস ফর্ম জমা নেবে বলে বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন, দাবি বিক্ষোভকারীদের। সেই আশ্বাস পাওয়ার পরেই বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।
আরও পড়ুন: ভাড়ার জট কাটেনি, স্বাস্থ্য বিমারও দাবি বেসরকারি বাস মালিকদের
স্বরূপনগরের বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিনেত্রী বীনা মণ্ডল অবশ্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যে, ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে যেন কোনও বৈষম্য না হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই আমরা কাজ করছি। ঝড়ে আমাদের জেলায় যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারের হাতে আড়াই লক্ষ টাকার চেক আমরা তুলে দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রেও তৃণমূল, বিজেপি বা সিপিএম দেখা হচ্ছে না। যাঁদের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য, তাঁরা সবাই পাবেন।’’