ওই মহিলা কর্মীর দাবি, নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দিতেন ওই নেতা। প্রতীকী ছবি।
বৈঠক চলাকালীন বিজেপি নেতাকে পা থেকে জুতো খুলে মারলেন দলেরই এক মহিলা কর্মী। এ নিয়ে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে (তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করছেন না ওই মহিলা কর্মী। তাঁর দাবি, নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দিতেন ওই নেতা। এ দিনও কুকথা বলছিলেন। হাত ধরে টানাটানি করেন। সহ্য করতে না পেরে মেরেছেন। ‘আক্রান্ত’ নেতার অবশ্য দাবি, এমন কিছু ঘটেনি। তবে একটা গন্ডগোল হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালির একটি হোটেলে বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা ডাকা হয়েছিল। বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদ্যোৎ বৈদ্য। সভা শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যে সেখানে আসেন ওই মহিলা কর্মী। তিনি আগে সাংগঠনিক জেলার উঁচু পদেও ছিলেন।
তাঁকে দেখে প্রদ্যোৎ প্রশ্ন করেন, ‘‘তুমি এখানে এসেছ কেন? তোমাকে কে ডেকেছে?’’ মহিলা বলেন, ‘‘আমাকে ডাকা হয়েছে বলেই এসেছি।’’ অভিযোগ, এর পরে প্রদ্যোৎ মহিলাকে নানা কুকথা বলেন। চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে মহিলা পা থেকে জুতো খুলে সভাপতির গালে কয়েক ঘা বসিয়ে দেন বলে অভিযোগ। দলের অনেকে মহিলার পক্ষ নিয়েই চিৎকার-চেঁচামিচি শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান প্রদ্যোৎ।
সভায় উপস্থিত কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সভাপতি দলের মহিলা কর্মীদের পদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কুপ্রস্তাব দিতেন। এ নিয়ে তাঁকে বহু বার সতর্ক করা হলেও তা তিনি কানে তোলেননি।
মহিলার কথায়, ‘‘উনি এ দিন আমাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলছিলেন। এর আগেও নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। আজ আর ধৈর্য রাখতে পারিনি। জুতো খুলে মেরেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, সভাপতি তাঁকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন।
ওই নেত্রীর দাবি, তাঁকে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রদ্যোৎ। তবে তাঁর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সম্ভবত পদ মেলেনি। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন মহিলা।
প্রদ্যোৎ পরে বলেন, ‘‘বকখালির মিটিংয়ে কিছু গন্ডগোল হয়েছিল। পার্টির মিটিংয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়েই থাকে।’’ কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মহিলাকে আমি চিনিই না। কোনও কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়নি। উনি মায়ের বয়সি মহিলা।’’
স্থানীয় বিজেপি নেতা অনুপ সামন্ত পরে বলেন, ‘‘সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠক ছিল। সেখানে দলের কয়েক জন কর্মী অনুমতি না নিয়ে ঢুকে পড়েন। তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। সভাপতিকে কেউ জুতো মেরেছেন কি না, তা জানি না। এমন ঘটে থাকলে তীব্র নিন্দা জানাই। বিষয়টি রাজ্য সভাপতির নজরে আনব।’’
এই ঘটনায় অবশ্য কটাক্ষ করার সুযোগ ছাড়েনি তৃণমূল। দলের নামখানা ব্লকের নেতা শ্রীমন্ত মালি বলেন, ‘‘দলের নেতাদের চরিত্র নিয়ে দলেরই মহিলা কর্মী এই ঘটনা ঘটালেন। এদের নিয়ে যত কম বলা যায়, ততই ভাল।’’