পুরনো ফর্মের স্তূপ থেকে কাগজ বার করছেন আধিকারিকেরা। সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
গাছ বাঁচাতে পুরনো, বাতিল কাগজ। পরিবেশের পাশে দাঁড়াতে এমনই উপায় খুঁজল বীরভূমের আঞ্চলিক মোটরযান দফতর।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ওই দফতরে মাসের পরে মাস ধরে পড়ে থাকা বিভিন্ন ফর্ম, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, সিএফ (সার্টিফিকেট অফ ফিটনেস), ন্যাশনাল পারমিটের অব্যবহৃত সাদা অংশে এ বার প্রয়োজনীয় তথ্য ছাপিয়ে গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে। লেখা থাকা দিকে ছাপানো হচ্ছে কাগজের ব্যবহার কমিয়ে গাছ বাঁচানোর বার্তা।
‘‘এতে এক দিকে যেমন পরিবেশ বাঁচানোর প্রয়াস রয়েছে, অন্য দিকে কিছুটা হলেও বাঁচছে সরকারি টাকা’’— বলছেন জেলা পরিবহণ আধিকারিক সন্দীপ সাহা। তিনি জানান, সিউড়িতে দফতরের ঘরে পুরনো কাগজের স্তূপ জমেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ওই সব পুরনো ফর্ম ‘এ৪’ কাগজের চেয়ে ভাল মানের, চকচকে।’’ হিসেব করে দেখা যায়, ওই ঘরে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার পুরনো ফর্ম, কাগজ রয়েছে। দফতরের এক আধিকারিকের হিসেবে, রাজ্যের অন্য মোটরযান দফতরগুলিতেও হয়তো এ ভাবেই পড়ে লক্ষ লক্ষ পুরনো ফর্ম, সার্টিফিকেট। বীরভূমের মোটরযান দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে রাজ্যে ‘বাহন ৪’ ব্যবস্থা চালু হয়। তার জেরে কার্যত গুরুত্ব হারায় পুরনো ফর্মগুলি। তবে নতুন ব্যবস্থায় মোটরযান দফতরের পরিষেবা আরও বেশি করে অনলাইনে মিললেও, গ্রাহক পরিষেবায় কাগজের ব্যবহার বেশি কমেনি। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কম্পিউটার প্রিন্টারের কাগজের জন্য জেলা প্রশাসন দফতরের কাছে মাঝেমধ্যেই আর্জি জানাতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় কাগজের জোগান মিলছে সহজেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মোটরযান দফতরের পুরনো ফর্মগুলির আকার এ৪ কাগজের চেয়ে একটু বড়। তা-ই কম্পিউটার প্রিন্টারে ব্যবহারের জন্য সেগুলি কেটে ছোট করে নেওয়া হচ্ছে। সে সব কাগজের ব্যবহৃত অংশে লেখা থাকছে— ‘১৭টা গাছ মেরে ১ টন কাগজ হয়। কাগজ বাঁচান, গাছ বাঁচান, জীবন বাঁচান।’
সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, এখন তাঁর দফতরে গতিধারার চুক্তিপত্র, লার্নার লাইসেন্স, নতুন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, গাড়ির মালিকানা বদলের নথি থেকে হরেক তথ্য ছাপানো হচ্ছে ব্যবহৃত ওই কাগজেই। পুরনো ফর্ম কেটে ছোট করা, তার প্রতিটিতে পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা ছাপাতে খরচ হচ্ছে ৬ পয়সা করে। যা নতুন এ৪ কাগজের কয়েকগুণ কম। তিনি জানান, ২২ মার্চ, বিশ্ব পরিবেশ দিবস থেকে ওই দফতরে নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ বিষয়ে বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘ভাবনাটা ভালই। তবে পুরনো ফর্মে ছাপা সরকারি তথ্য পরে কাজে লাগতে পারে কি না, নতুন ভাবে ব্যবহারের আগে তা দেখে নিতে হবে।’’