বসন্তোৎসবের দিনে এমনই অবস্থা ছিল মেলার মাঠের। ফাইল চিত্র
সরকারি খরচ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় এ বার শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতি-পর্ব চূড়ান্ত হওয়ার পরে করোনা-আতঙ্কে উৎসব বাতিল হয়ে যাওয়ায় এখন প্রশ্ন উঠছে, এতে সরকারি কত টাকার ক্ষতি হল। আর, উৎসব সফল করার দায়িত্ব যাঁদের কাঁধে ছিল, তাঁদের প্রাপ্য টাকাই বা কী ভাবে, কতটা মেটানো হবে সেই অঙ্ক।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব বাতিল হওয়ার পরে হতাশা গ্রাস করেছিল সকলকে। সেই তালিকায় ছিলেন আগত পর্যটক, স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, অধ্যাপক কর্মীরা। এর পাশাপাশি টাকা কবে, কতটা মিলবে সেই চিন্তাও করতে হচ্ছে মণ্ডপ তৈরি, আলো, শব্দের ব্যবস্থাপনা, সরাসরি সম্প্রচার সহ বিভিন্ন কাজের দায়িত্বপ্রাপ্তদের।
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলছেন, ‘‘কত টাকার ক্ষতি বা যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের টাকা কী ভাবে দেওয়া হবে বিশদে সেটা শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ বলতে পারবে।’’ এসএসডিএ-র আধিকারিকরা এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘বাজেট কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কত টাকার ক্ষতি হল, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে কাজ যাঁরা করেছেন, তাঁদের তো টাকা দিতে হবে। তার হিসেব চলছে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, মূল মঞ্চ, ব্যারিকেড, রাস্তায় ব্যারিকেড, আলো, সাউন্ড সিস্টেম, সরাসরি জায়ান্ট স্ক্রিনে অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা, কয়েকশো শৌচাগার তৈরি করে জলের ব্যবস্থা সহ নানা কাজে বাজেট ১ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ডেকরেটরের জন্য খরচ ধরা ছিল কমবেশি ৬০ লক্ষ টাকা। মঞ্চসজ্জা, জায়ান্ট স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার বাবদ বেশ কয়েক লক্ষ। ৪৫০টি শৌচাগার বানাতে কমবেশি ২২ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া আলো ও সাউন্ড সিস্টেমের জন্য নানা খাতে মোটা টাকা ধরা হয়েছিল।
শেষ মুহূর্তে যখন অনুষ্ঠান বাতিল হয়, তখন কাজের কোনওটিতে ৯০ শতাংশ, কোনওটি ১০০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল।
সেই কাজের মূল্যায়ণ করে কাকে, কত টাকা দেওয়া যায় তার হিসেব চলছে। যে পর্যায়ে কাজ আটকেছে, সেই অবস্থার ছবি ও ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে প্রশাসন ও এসএসডিএ-র তরফে। কিন্তু, টাকা কবে মিলবে? প্রশাসনেরই একটা সূত্র বলছে, এখনও রাজ্য সরকারের তরফে বরাদ্দ টাকার বড় অংশ পৌঁছয়নি। এলেই বণ্টনের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।