প্রতীকী ছবি।
নিত্যনতুন পদ্ধতিতে অনলাইনে প্রতারণা বাড়ছে প্রতি দিন। সম্প্রতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নকল করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেই প্রতারণার আশঙ্কায় এ বার কেন্দ্রীয় খাদ্য ও বণ্টন মন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে চিঠি দিল অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন।
সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, দিন দিন আধার কার্ডে থাকা তথ্য ও বায়োমেট্রিকে আঙুলের ছাপ নকল করে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা ঘটে চলেছে। রেশন পেতে গেলে বর্তমানে আধার কার্ড ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমন পদ্ধতিতেই যে হেতু বেশি প্রতারণার ঘটনা ঘটছে, তাই রেশন ডিলাররা আতঙ্কিত। তাঁদের কথায়, বায়োমেট্রিক বা আধার কার্ডের তথ্য দিতে গিয়ে গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হলে, স্বাভাবিক ভাবেই সেই প্রতারণার অভিযোগ উঠতে পারে রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে। তাই এই সমস্যার সমাধান করুক কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। এ ক্ষেত্রে তাঁরা রেশন দোকানেই ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (ইউআইডিএআই)-র কর্মী নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। তবে প্রশাসনিক স্তর থেকে সব রেশন দোকানে এই ধরনের কর্মী কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নিয়োগ করা যে সম্ভব নয়, তা একবাক্যেই মানছেন রেশন ডিলাররা। তাঁদের কথায়, প্রতারণার অভিযোগ থেকে বাঁচতেই আগাম ব্যবস্থা হিসাবে তাঁরা এই দাবি জানাচ্ছেন। নচেৎ কেন্দ্রীয় সরকার ভিন্ন পদ্ধতিতে রেশন দেওয়ার বন্দোবস্ত করুক।
অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশনের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘আমরা কোনও প্রতারণার দায় নিতে পারব না। আমরা রেশন দোকান মারফত আমজনতাকে পরিষেবা দিই। সেই পরিষেবা মারফত যে অর্থ রোজগার করি, তা দিয়েই আমরা আমাদের সংসার চালাই। তাই আমাদের কাছে সামাজিক সম্মানটাই বড় কথা। সে কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারকে আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি।’’ গ্রাহকের অজান্তে তাঁর আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য (এ ক্ষেত্রে মূলত আঙুলের ছাপ) দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বাড়ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মোবাইলে এসএমএস পেয়ে চুরির কথা জানতে পারছেন গ্রাহকরা। ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে, তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাই করেই সেই লেনদেন হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, মূলত ছয়টি রাজ্যে এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে এই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠছে।
সেই রাজ্যের বাসিন্দারাই মূলত সাইবার অপরাধীদের নিশানায়। সেই রাজ্যগুলি হল—রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও পশ্চিমবঙ্গ। এর পাশাপাশি দিল্লিতেও বেশ কয়েকটি জায়গায় এই ধরনের প্রতারণা সংক্রান্ত অভিযোগ উঠে এসেছে। সেই অভিযোগের কথা সম্প্রতি রেশন ডিলারদেরও কানে এসেছে। এই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ থেকে বাঁচতেই তাঁরা কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন।