বিধানসভায় তৃতীয় বারের জন্য অধ্যক্ষ হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তৃতীয় বারের জন্য অধ্যক্ষ হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাজ্য বিধানসভায় C বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে অধ্যক্ষ পদে বসলেন তিনি। ২০১১ সালে প্রথম বার তৃণমূল ক্ষমতায় এলে এই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয় বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ককে। ২০১৬ সালে ক্ষমতায় ফিরে আবারও তাঁকেই এই দায়িত্বে রেখে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারের নীলবাড়ির লড়াইতেও মসৃণ জয় পেয়েছেন এই আইনজীবী। তাই আবারও তাঁর উপরেই আস্থা রেখেছেন মমতা। ফলাফল ঘোষণার পরদিনই তৃণমূল ভবনে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ পদে ফের এক বার বিমানবাবুর নাম ঘোষণা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিমানের আগে একমাত্র সিপিএম নেতা হাসিম আব্দুল হালিমের ৬ বার বিধানসভার অধ্যক্ষ হওয়ার নজির রয়েছে।
১৯৭৭ সালে যখন বামফ্রন্ট সরকার প্রথম বার ক্ষমতায় আসে, তখন অধ্যক্ষ হন সৈয়দ মনসুর হবিবুল্লাহ। কিন্তু ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় বার বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এলে অধ্যক্ষ হন হালিম। সেই থেকে টানা ২০১১ সাল পর্যন্ত এই পদে থেকেছিলেন তিনি। তার পর তিন বার অধ্যক্ষ হলেন বিমান। এক্ষেত্রে নিজের ২ পূর্বসূ্রিকে অতিক্রম করেছেন এই আইনজীবী বিধায়ক। যুক্তফ্রন্ট আমলে ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালে ২ বার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ হন রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বাম সমর্থিত নির্দল বিধায়ক বিজয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে বাগদার কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্বলাল পোদ্দার পর পর ২ বার অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। এই ২ পূর্বসূরিকে টপকে বিমানবাবুর সামনে এখন কেবল হালিম।
তৃতীয় বার অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানবাবু বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ পদ খুবই সম্মানের পদ। এবং বিগত ১০ বছর ধরে আমি ওই পদে থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সংসদীয় গণতন্ত্র প্রসঙ্গে, তা আমাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে। আমি আনন্দিত যে, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে এবং দল হিসেবে তৃণমূলের সমস্ত বিধায়ক মিলে আমার নাম অধ্যক্ষ হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। আমাকে তৃতীয় বারের জন্য এই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি নিষ্ঠার সঙ্গে এই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সংবিধান মেনেই আমাদের চলতে হয়। সংবিধান মেনেই আমরা কাজ করব। এতদিন যে ভাবে করে এসেছি, আগামী দিনেও করব। এবং সামগ্রিক ভাবে আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র যাতে আরও বেশি সমৃদ্ধ হয় সেই চেষ্টাই আমি করে যাব।’’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বিমান অধ্যক্ষ হলে উপাধ্যক্ষ হন সাতগাছিয়ার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ। কিন্তু ২০১৬ সালে তাঁর বদলে স্পিকার হন প্রাক্তন পুলিশকর্তা তথা উলুবেড়িয়া পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক হায়দর আজিজ সফি। ২০১৯ সালে তাঁর প্রয়াণ ঘটলে উপাধ্যক্ষ হন ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা। কিন্তু গত বছর তাঁর মৃত্যু হলে উপাধ্যক্ষ পদটি শূন্যই থেকে যায়। এখনও এই পদে তাঁদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি তৃণমূল।