স্পিকার বনাম রাজ্যপাল তরজা চলছেই। ফাইল চিত্র
ফের রাজ্যপাল বনাম বিধানসভার স্পিকারের তরজা শুরু হল। বুধবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন সর্বভারতীয় স্পিকারদের সম্মেলনে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে, তেমনই পাল্টা পত্রাঘাত করে সেই আক্রমণের জবাব দিল রাজভবন। রাজভবনের সঙ্গে বিধানসভার সঙ্ঘাত এখন আর কোনও নতুন ঘটনা নয়। বুধবার বিধানসভা থেকেই স্পিকারদের ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। হাতে তিন পাতার অভিযোগপত্র নিয়ে ১২ মিনিট বক্তৃতা করেন বিমান।
অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ বিধানসভার একাধিক ইস্যুতে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করছেন। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল। বিধানসভাকে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি।’’ পাশাপাশি, বিধানসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে সিবিআই ও ইডি-র পদক্ষেপ প্রসঙ্গেও স্পিকারদের সম্মেলনে সরব হন তিনি। বিমান বলেন, ‘‘আমায় না জানিয়ে বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি লোকসভার কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে স্পিকারের অনুমতি নিচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা ঘটছে। স্পিকারের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না।’’
যদিও, স্পিকার সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, স্পিকারদের সম্মেলনে তিনি সরব হবেন এই বিষয়গুলি নিয়েও। স্পিকারের বক্তব্যের রেশ ধরেই পাল্টা চিঠি দিয়েছে রাজভবন। সেই চিঠিতে কড়া ভাষায় বিমানের ভুমিকার সমালোচনা করা হয়েছে। রাজ্যপালের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে আসার পর বিধানসভার স্পিকার তরফে তাঁর সঙ্গে সঠিক ব্যবহার করা হয়নি বিধানসভায় দু’বার যে তাঁর বক্তৃতা ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছিল, তারও উল্লেখ চিঠিতে রয়েছে। বিধানসভা পরিদর্শনে গেলে কোনও সরকারি আধিকারিক তাঁকে স্বাগত জানাননি, সঙ্গে বেশির ভাগ দফতরই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল- উল্লেখ করেছে এই চিঠি। যে ভাবে দু’পক্ষই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ মেতেছেন, তাতে এই তরজা আগামী দিনেও চলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ২৩ জুলাই সর্বভারতীয় স্পিকারদের সম্মেলনে প্রথম বারের জন্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিমান। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে বিধানসভার স্পিকার অভিযোগ করেছিলেন, বিধানসভা থেকে কোনও বিল পাঠানো হলে তা স্বাক্ষর করা হচ্ছে না। এ ভাবে বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপ করা রাজ্যপালের এক্তিয়ারে পড়ে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।