বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।—ফাইল চিত্র।
ভাবাদিঘি যাওয়ার পথে গোঘাটের উল্লাসপুরে আক্রান্ত হলেন সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সদস্যরা। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের রাস্তায় ফেলে মারধর করে। পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। বার বার আবেদন জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বাধ্য হয়েই পথে আক্রান্ত হয়ে ভাবাদিঘি না গিয়ে ফিরে আসেন বিকাশবাবুরা। যদিও স্থানীয় তৃণমূল এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে।
এ দিন ভাবাদিঘি আন্দোলনে যোগ দিতে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সদস্যরা যাচ্ছিলেন। আরামবাগ হয়ে গোঘাট যাওয়ার পথে তাঁদের রাস্তা আটকে দাঁড়ায় জনা তিরিশেক তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, তারা বিকাশরঞ্জনকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে আসে। এর পর তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন অন্য সদস্যরাও। বিকাশবাবুর অভিযোগ, তাঁকে লাথি, কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়েছে। তিনি পিঠে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। এমনকী, মহিলা সদস্যদেরও ছাড়া হয়নি, তাঁরাও আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলার জমি ধরে রাখার কাজেই এ বার মন দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাধ্য হয়েই ফিরতে হয়েছে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সদস্যদের। ফেরার পথে আরামবাগের মহকুমাশাসকের কাছে তাঁরা লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসেন। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘সারা জীবনে এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়নি। ’৭২ সালেও এমন ঘটনা ঘটেনি। তখনও কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি। এই সব তৃণমূলকর্মী সমস্ত কিছু করতে পারে।’’ এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেল ৫টায় এন্টালি মার্কেট থেকে মিছিল করে বামফ্রন্ট।
সূর্যকান্ত মিশ্রের টুইট।
বিকাশবাবুর দাবি, নারদা, সারদা, টেট সমেত বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে আইনি অবস্থান নিয়ে কড়া সওয়াল করে আসছেন তিনি। আর এতেই শাসকদলের ঘুম ছুটেছে। এই ঘটনাটি হল শাসকদলের বিরোধিতারই ফল।
যদিও স্থানীয় তৃণমূলের তরফে সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, সিপিএম আমলে তৃণমূলের যে কর্মীরা শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের লোকজনই ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সদস্যদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিন্তু কাউকে মারধর করা হয়নি। গোঘাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদারের অভিযোগ, এলাকায় এসে অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যরা। তৃণমূলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই। জমি জটে আটকে রয়েছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেললাইনের কাজ। অভিযোগ, যে সমস্ত পরিবার জমি দিতে চায়নি, তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে তৃণমূল। সেই সব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতেই যাচ্ছিলেন বিকাশবাবুরা।
এই ঘটনার নিন্দা জানানিয়েছেন আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন,‘‘ মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার মধ্যেই যেভাবে বিকাশ বাবু এবং আমাকে জগাই - মাধাই বলে শাসিয়েছেন তাতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা উৎসাহিত হয়ে হামলা চালিয়েছে। ওরা যতই হামলা করবে, আমাদের আন্দোলন ততই তীব্র হবে। বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন।’’