গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মন্ত্রি-কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চমকে ওঠার মতো তথ্য এল সিবিআইয়ের হাতে। শুধু বেআইনি চাকরিই নয়, নিয়ম না মেনে বাড়ির কাছের স্কুলে নিয়োগ নিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সিবিআই জানতে পেরেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) যে স্কুলগুলির তালিকা দিয়েছিল তাতে যোগ দেননি মন্ত্রি-কন্যা অঙ্কিতা। আইনের তোয়াক্কা না করে তিনি বেছে নেন বাড়ির সামনের একটি স্কুলকে। ফলে সেখানেও মন্ত্রী-বাবা পরেশ অধিকারীর হাত রয়েছে বলে অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মন্ত্রিকন্যা অঙ্কিতার বিরুদ্ধে। মামলাকারী ববিতা সরকারের থেকে কম নম্বর পেয়েও তিনি চাকরি পান। অভিযোগ ওঠে, ২০১৭ সালের নভেম্বরে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। সেই তালিকায় প্রভাব খাটিয়ে প্রথম স্থান ‘অর্জন’ করেন অঙ্কিতা। নিয়ম অনুযায়ী, সেই তালিকা মেনে উত্তীর্ণদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয়। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ে ডাক পান অঙ্কিতা। সেখানে তাঁকে ১৩টি স্কুলের নাম দেওয়া হয়। অঙ্কিতা বেছে নেন বেলপাহাড়ি গার্লস হাই স্কুলের নাম। কিন্তু তা খাতায় কলমে থেকে যায়। আশ্চর্যজনক ভাবে তিনি যোগ দেন বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে। যে স্কুলে অঙ্কিতা এক সময় পড়াশোনা করতেন।
ওই সূত্রের আরও খবর, অঙ্কিতার জন্য ছিল বর্ধমান, পুরুলিয়া, পশ্চিম এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দু’টি করে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার চারটি ও বাঁকুড়ার একটি স্কুলের নাম। অর্থাৎ, রাজ্যের তালিকা না মেনে বেআইনি ভাবে ইচ্ছামতো স্কুলে চাকরি নিয়েছেন অঙ্কিতা। বিষয়টি শুনে চমকে যান অনেকেই। মামলাকারীদের এক আইনজীবী জানান, এ ক্ষেত্রেও মন্ত্রী বাবা প্রভাব না খাটালে সম্ভব হত না। কারণ, এসএসসি ঠিক করে বিষয় অনুযায়ী কোন স্কুলে কত শূন্যপদ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অঙ্কিতা এসএসসি-র নিয়ম মানেননি। ফলে ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে শূন্যপদ ছিল কি না তা-ও পরিষ্কার নয়। না থেকে থাকলে তাঁকে জোর করে সেখানে ঢোকানো হয়েছে। এই বিষয়টিও এখন সিবিআইয়ের নজরে এসেছে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার এই মামলার মামলাকারী ববিতা সিবিআই দফতরে যান। সেখানে তদন্তকারীদের তিনি একাধিক তথ্য দিয়ে আসেন। তাঁর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘আমরা সিবিআইকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করেছি। এখন আমাদের আশা তারা দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত করে শাস্তি দেবে। বঞ্চিতরা যাতে তাড়াতাড়ি চাকরি পান সেটাই চাই।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।